চট্টগ্রাম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫:
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় নিজ ঔরসজাত কন্যাকে ধর্ষণের ঘটনায় নরপশু পিতা মোহাম্মদ আলীকে(৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নরপশু তার মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করে গর্ভবতী করার পর তাকে গর্ভপাত করানো হয় বলে পুলিশ জানায়।
উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মনোহর চৌধুরীপাড়ায় এমন বর্বরোচিত ঘটনা সংগঠিত হলেও ভিকটিম বা এলাকার লোকজন কেউ এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
লোকমুখে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) থেকে জানতে পেরে থানা পুলিশ ২৪ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সকালে ধর্ষকের নিজ বাড়ি মনোহর চৌধুরী পাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ধর্ষককে। এ ঘটনায় ওই কন্যা সন্তানের মা বাদি হয়ে ধর্ষক মোহাম্মদ আলীকে একমাত্র আসামি করে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ধর্ষণের শিকার মেয়েটি তার নরপশু বাবার দ্বারা চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক বারটার দিকে তার শয়ন কক্ষে প্রথমবার ধর্ষণের শিকার হয়। এর পর মেয়েটি তার শয়ন কক্ষে একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হলেও মা ও মেয়েকে মেরে ফেলার ভয় দেখানোর কারণে বিষয়টি মার কাছে গোপন করে মেয়েটি।
মামলার বাদির এজাহার মতে, ২০১০ সালের দিকে মোহাম্মদ আলীর সাথে বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই ছেলে ও দুই কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। তাদের মধ্যে ধর্ষণের শিকার ১২ বছরের কন্যাটি ছেলেমেয়েদের সবার বড়। বিগত ১০-১৫ দিন আগে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পেট ব্যথার কথা বলে বমি করে। মঙ্গলবার (২২এপ্রিল) পুনরায় মেয়ের পেট ব্যথা ও বমি শুরু হলে স্বামীকে দিয়ে তাকে উপজেলার কেরানীহাট এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। মেয়ে আড়াই মাসের গর্ভবতী জেনে চিকিৎসক স্বামীর মাধ্যমে মেয়ের মাকে হাসপাতালে ডেকে আনেন। তারপর মেয়ের অবস্থা খারাপ দেখে গর্ভপাত করানো হয়।
এদিকে ভিকটিমের মা জানান, মেয়ের বাবাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করে। বিষয়টি কাউকে না বলার অনুরোধ করেন। তার কথা শুনে আমি হঠাৎ স্তম্ভিত ও জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ি। পরে আমার ভাইকে হাসপাতালে ডেকে নিয়ে যাই। ভাইসহ নিকট আত্মীয়দের সাথে পরামর্শ করে স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করি।
স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এ ঘটনাটি সাতকানিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিষয়টি বলতে আমার খুবই লজ্জা লাগছে। আমি মনে করি, মানসিক বিকারগ্রস্ত লোক ছাড়া এ ধরনের কাজ কেউ করতে পারে না।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জাহেদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালেই ধর্ষক বাবাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নরপিশাচ বাবা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মেয়ের মা বাদি হয়ে বাবাকে একমাত্র আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। তাকে (ধর্ষক) বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।