চট্টগ্রাম, ৫ জানুয়ারি, ২০২২:
সমন্বিত সরকারি অফিস কমপ্লেক্স নির্মাণ পরিকল্পনার স্থান নগরীর কর্ণফুলি নদীর তীরে হামিদ চর এলাকা পরিদর্শন করেছেন জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম। আজ সকালে এলাকাটি পরিদর্শনে যান তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ কামরুল হাসান, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান সহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ। ৭৩ দশমিক ৪২ একর জমিতে কমপ্লেক্স নির্মাণের স্থানটি চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসন। নগরের চান্দগাঁও ওয়ার্ডের বন্দর মৌজার অন্তর্গত হামিদ চরে প্রস্তাবিত সমন্বিত অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত করেছে জেলা প্রশাসন।
যেখানে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সহ প্রায় ৪৪টি সরকারি অফিস থাকবে। এছাড়াও সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার, শপিং মল, মাল্টি স্টোরেড কার পার্কিং, থিয়েটার ও মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা থাকবে। মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক অফিস পুত্রজায়ার আদলে এটাকে ‘চট্টগ্রামে মিনি সেক্রেটারিয়েট’ হিসাবে ভাবা হচ্ছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটি অফিস থাকবে বলে জানান সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ।
জনপ্রশাসন সচিব আলী আজম সাংবাদিকদের বলেন, পরীর পাহাড় বহুকালের ঐতিহ্য বহন করে আসছে। এটি একটি ঐতিহ্যবাহী পাহাড়। তাই এটি সংরক্ষণ করতে হবে। এ পাহাড়কে সংরক্ষণের জন্য মূলত আমাদের এই সমন্বিত দফতর। ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, পরীর পাহাড়ের সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য। শুধু পরীর পাহাড় নয়, দেশের সব জায়গার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। সুতরাং, পরীর পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনা থাকবে না। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ৭৫ একর জমি নিয়ে আমরা সমন্বিত অফিস কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের চিন্তা-ভাবনা করছি। ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অবহিত হয়েছেন। আমরা পরবর্তী পদ্ধতিগত দিকগুলো অনুসরণ করে এ বিষয়ে যা করণীয় সেটি করবো। আমাদের দেশ উন্নত হচ্ছে। উন্নত দেশের সরকারি কাজ কর্ম বা অফিসের কাজ কর্মের পরিবেশ ভালো করা একান্ত প্রয়োজন। সুন্দর অফিসে বসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করবেন। সেখান থেকে আমরা ভালো কাজ, গুণগত কাজ উপহার পাবো। এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশনা।
তিনি বলেন, এখন থেকে আমরা যে সমস্ত অফিস করছি তার পরিবেশ, চারপাশের প্রতিবেশ, ভেতরের অবয়বে অনেক পরিবর্তন আসছে। এসব কিছুর চিন্তা করেই এই সমন্বিত দফতর।
কর্ণফুলী নদীর তীরে হওয়ায় কোনো প্রভাব পড়বে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ রকম প্রকল্পগুলো করার আগে আমরা পরিবেশ অধিদফতরের একটা ইমপ্যাক্ট এনালাইসিস করে নিবো। যদি পজেটিভ আসে তখন পরিবেশ অধিদফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে পদ্ধতিগতভাবে তাদের অনুমোদন নিয়ে নিবো।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় রাজধানী। এ শহরের একটা আলাদা ঐতিহ্য আছে। সমন্বিত দফতরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটা ছোট অফিসের ব্যবস্থা আমরা রাখতে চাই। আমার দেখে খুব ভালো লাগছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রস্তাবনা রাখবো।
বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসান বলেন, এখন সরকারের কাজ হলো জনগণের প্রাপ্য সেবাসমূহ জনগণের দোড়গোড়ায় নিয়ে যাওয়া। এখন যেখানে অফিস রয়েছে সেখানে জনগণের সেবাসমূহ সচ্ছন্দে দেওয়া যাচ্ছে না। এজন্যই আমাদের এই সমন্বিত দফতর। এটি একটি ক্রমবর্ধমান এলাকা। এখানে বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি হচ্ছে। মূল শহর থেকে ১০ থেকে ১৫ মিনিটে এখানে আসা যাবে। ইতোমধ্যে এ স্থানে সরকারি ৪৪টি অফিস আসার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে। এখানে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ পাবে জনগণ। এক স্থান থেকে সব সেবা পাবেন তারা। এখনও বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আমরা জায়গা নির্ধারণ করেছি। আলোচনা হচ্ছে। এরপর পরবর্তী ধাপগুলো আমরা এগুবো। এ স্থানে আসার জন্য জল এবং স্থল যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকবে।
সমন্বিত দফতর পরিদর্শন শেষে প্রজেক্টরের মাধ্যমে জায়গাটির বিস্তারিত বর্ণনা দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান।
Discussion about this post