চট্টগ্রাম, ১৩ ফেব্রুয়ােরি, ২০২২ :
সারাদেশ ব্যাপি আলোচিত কক্সবাজারের চকরিয়ায় তরকারি বোঝাই পিকআপ চাপায় একই পরিবারের পাঁচ সহোদর নিহতের ঘটনায় আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পর র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারকৃত ঘাতক চালক সাহিদুল ইসলাম প্রকাশ সাইফুলকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল রবিবার দুপুরে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ও মালুমঘাট হাইওয়ে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল হোসেন চালক সাইফুলকে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করেন। এ সময় এসআই আবুল হোসেন মামলার অধিকতর তদন্তের স্বার্থে আসামি সাইফুলকে সাত দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন জানালে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক রাজিব কুমার দেব তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট উমর ফারুক বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
অ্যাডভোকেট উমর ফারুক বলেন, গত মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের কর্ম শেষে বাড়ি ফেরার পথে মহাসড়কের মালুমঘাট এলাকায় তরকারি বোঝাই পিকআপ চাপায় নিহত হয় একই পরিবারের পাঁচ সহোদর। এ সময় আহত হয় তাদের আরো দুই ভাই ও এক বোন। দুর্ঘটনার পর পিকআপ গাড়ির মালিকের পরামর্শে আত্মগোপনে চলে যান চালক সাইফুল। অবশেষে শুক্রবার দিবা গত রাতে র্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক টিম রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে চালক সাইফুলকে গ্রেপ্তার করে। পরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত চালক সাইফুল পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা উপজেলার বাসিন্দা মো.আলী জাফরের ছেলে।
তিনি আরও বলেন, রবিবার দুপুরে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ও মালুমঘাট হাইওয়ে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল হোসেন চালক সাইফুলকে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। এ সময় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক রাজিব কুমার দেব তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতে আসামি সাইফুলের পক্ষে কোন আইনজীবী তার জামিনের আবেদন করেননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মালুমঘাট হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল হোসেন বলেন, পিকআপ চাপায় পাঁচ সহোদরের মৃত্যুর ঘটনায় পিকআপ চালক সাহিদুল ইসলাম প্রকাশ সাইফুলকে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকা- তা খতিয়ে দেখার জন্যই মূলত চালক সাইফুলকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
গত মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে সদ্য প্রয়াত পল্লী চিকিৎসক ডা. সুরেশ চন্দ্র সুশীলের শ্রাদ্ধকর্ম সম্পন্ন করে বাড়িতে ফেরার পথে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের মালুমঘাট এলাকায় একটি তরকারি বোঝাই পিকচাপায় ঘটনাস্থলে নিহত হয় তার পাঁচ ছেলে অনুপন সুশীল, নিরুপম সুশীল, দীপক সুশীল, চম্পক সুশীল ও স্বরণ সুশীল। এ সময় আহত হয় সুরেশের আরও দুই ছেলে ও এক মেয়ে। আহতদের মধ্যে রক্তিম সুশীল চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালের ইনসেফটিক কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে এবং বোন হীরা শীল মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিস্টান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে তার একটি পা কেটে ফেলা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর ঘাতক পিকআপটি দ্রুত পালিয়ে গেলেও পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাহাড়ি এলাকা থেকে গাড়িটি আটক করে। তবে চালক পলাতক ছিলেন। ঘটনার দিন রাতে নিহতদের ভাই প্লাবন সুশীল বাদি হয়ে পিকআপ চালককে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে চকরিয়া থানায় একটি মামলাটি দায়ের করেন।
Discussion about this post