চট্টগ্রাম, ২৭ মার্চ, ২০২২:
রাঙামাটি সহ দেশের নানা জায়গা থেকে তরমুজ এসেছে বাজারে। নগরের ফলের বাজার, ফলমন্ডি ভওে গেছে তরমুজে। ক্রেতারা ধারণা করছেন, রাঙামাটির তরমুজ আসায় অনেকটা সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে তরমুজ।
রাঙামাটিতে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। সেখানকার উৎপাদিত তরমুজ এখন স্থানীয় হাটবাজার ছাড়িয়ে জেলার বাইরেও বিক্রি হচ্ছে। আসছে রসালো প্রচুর তরমুজ।
কৃষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে এ খবর জানা গেছে। রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা। বাঘাইছড়ি, লংগদু, নানিয়ারচর, বরকল, বিলাইছড়ি ও জুরাছড়ি উপজেলায় উৎপাদিত তরমুজ জেলা শহরে নিয়ে আসার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত হয়ে যায়। রাঙামাটিতে টোফেল, গ্লে-ারি ও চ্যাম্পিয়ন জাতের তরমুজের বীজ আবাদ হয়ে থাকে।
রাঙামাটির কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার পাল জানান, তাদের পরিসংখ্যান মতে রাঙামাটি জেলায় এ বছর ২৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। এর ২০০ হেক্টর জমির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফল হয়েছে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০ টন। বেশির ভাগ তরমুজের চাষাবাদ ও ফলন হচ্ছে জেলার লংগদু উপজেলায়। কয়েক বছর ধরে সদর উপজেলাতেও তরমুজের আবাদ চলছে। জেলা সদরে এবার মৌসুমে ৪০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রাঙামাটিতে উৎপাদন প্রচুর হওয়ায় স্থানীয়ভাবে হাটবাজারে তরমুজ সুলভ মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে। এতে ভোক্তা ও কৃষক উভয়ে লাভবান হচ্ছেন। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে বড় ও মাঝারি আকারের প্রতি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ১০০-২০০ টাকা এবং ছোট আকারের তরমুজ ৬০-১০০ টাকায়।
চাষিরা জানান, তরমুজের চাষাবাদে ২/৩ লাখ টাকা খরচ করলে ২/৩ গুণ লাভ আসে। আমরা জলে ভাসা জমিতে বছরে ৪/৫ মাস চাষ করতে পারি। বাকি সময়ে জমি পানিতে ডুবে থাকে। পানি শুকিয়ে জমি ভেসে উঠলে তরমুজের বীজ রোপণ করি। এবার মৌসুমেও তরমুজের উৎপাদন ও ফলন খুব ভালো। এবার মৌসুমের শুরুতে রাঙামাটির বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় উৎপাদিত প্রচুর তরমুজ বাজারে আসছে। বড়, মাঝারি, ছোট- যে কোনো আকারের তরমুজ স্বাদে মিষ্টি ও রসালো।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রতন কুমার পাল বলেন, প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে কাপ্তাই লেকের পানি কমে গেলে প্রচুর আবাদযোগ্য জমি ভেসে ওঠে। এসব জমিতে প্রচুর তরমুজের আবাদ করেন স্থানীয় চাষিরা। তরমুজের বাম্পার ফলন পাওয়ায় অভাবনীয় লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। উপযুক্ত আবহাওয়া, জমির উর্বরতা এবং উন্নত চাষাবাদের কারণে রাঙামাটিতে প্রতি বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হচ্ছে।