চট্টগ্রাম, ২৮ মে, ২০২২:
১২ কোটি টাকায় কালুর সেতুতে আবার জোড়াতালি দেওয়ার ব্যবস্থা করছে রেলওয়ে। এজন্য বুয়েটের বিশেষজ্ঞ টিমের সাথে বৈঠক করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ টিম টাকার চাহিদা দিয়েছে ১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকার। গত শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমকে এসব তথ্য জানান রেল সচিব
প্রায় শত বছরের পুরনো চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু দিয়ে আগামী বছরের ডিসেম্বর থেকে চলবে কক্সবাজারগামী ট্রেন। বিপদজনক সেতুটিকে ট্রেন চালানোর উপযোগী করার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক হয়েছে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দলের। তারাই মেরামত করে সেতুটিতে রেল চলাচলের উপযোগী করবে।
সূত্র মতে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের দিকে নতুন কক্সবাজার রুটে পর্যটকবাহী এবং যাত্রীবাহী ও লোকাল ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এজন্য চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল লাইনের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে।
কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন কালুরঘাট সেতুর কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশল বিভাগ।
যে কারণে নতুনভাবে জোড়াতালি দেওয়া হবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, আমাদের টার্গেট আছে আগামী বছরের জুনে কক্সবাজার রেল লাইনের কাজ শেষ করা। তাই এখন আমরা জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যমান (পুরনো সেতুটি) সেতুটি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছি। বুয়েটকে আমরা অগ্রাধিকার দিয়েছি বলেই আমি আজকে(গতকাল) সেতুটি দেখতে এসেছি। বুয়েটের পরামর্শ অনুযায়ী পুরনো এই সেতুটি মেরামত করে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে।
অন্যদিকে কালুরঘাট সেতুর অর্থায়নের ব্যাপারে নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, সহসা কালুরঘাট সেতুর কাজ শুরু হবে। অর্থায়নের বিষয়ে এ বছরের মধ্যে চুক্তি হয়ে যাবে। আর সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে আগামী বছরের শুরুতে।
তিনি বলেন, আমরা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে এসেছি। অর্থায়নের ব্যাপারে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক নীতিগতভাবে সম্মতি দিয়েছে, তারা অর্থায়ন করবে। তবে এখনো আমাদের ফাইনাল যে চুক্তি সেটি হয়নি। ঋণের ক্ষেত্রে কিছু শর্ত থাকে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে।
গত শুক্রবার বিকালে প্রস্তাবিত কালুরঘাট সেতু এলাকা পরিদর্শন এবং বিদ্যমান পুরনো কালুরঘাট সেতু পরিদর্শনে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন।
আগামী বছর থেকে কক্সবাজারে ট্রেন চলাচলের ব্যাপারে তিনি বলেন, তাড়াতাড়ি যাতে বুয়েটকে দিয়ে কাজ করা যায়- আমরা সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। তারা পরামর্শ ফি বাবদ আমাদের কাছে একটি প্রস্তাবনা দিয়েছে। আমরা সেটি বিবেচনা করছি।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কালুরঘাটের শত বছরের পুরনো সেতু দিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত ৯০ থেকে ৯২ টন ওজনের ইঞ্জিনসহ আধুনিক কোচ নিয়ে কক্সবাজারগামী দ্রুতগতির ট্রেন চলাচল সম্ভব নয়। বর্তমানে বিপদজনক পুরনো কালুরঘাট সেতু দিয়ে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলছে কোনোমতে।
বুয়েটের পরামর্শ অনুযায়ী সেতুটি মেরামত করা হলে আধুনিক ইঞ্জিন ও কোচ নিয়ে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালানো যাবে বলে জানান চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সেতু মেরামত করা না হলে বর্তমান কালুরঘাট সেতু দিয়ে কক্সবাজার রুটে দ্রুতগতির ট্রেন চালানো একেবারেই অসম্ভব বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল। একই কথা স্বীকার করেছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশল বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। তাই বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দলের দেয়া প্রস্তাবনা অনুযায়ী সেতু মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে গত শুক্রবার রেল সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর কালুরঘাট ব্রিজ পরিদর্শনে আসলে প্রায় দেড় ঘণ্টা যান চলাচল বিঘিœত হয়। উভয় পারে যাত্রীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসলেও দোহাজারী থেকে চট্টগ্রামমুখী ফার্নেস অয়েল বহনকারী খালি ওয়াগন কালুরঘাট ব্রিজের মাঝপথে লাইনচ্যুত হয়। এতে ওয়াগনের পিছনের ইঞ্জিন-বডি একেবারে লাইন থেকে সরে ছিটকে পড়ে। এ ঘটনার পর ব্রিজের দু পাশে শতশত গাড়ি আটকা পড়ে। দুর্ভোগে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী।
এ রকম ঝুঁকিপূর্ণ
Discussion about this post