চট্টগ্রাম, ৭ জুলাই, ২০২২:
এরমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে পবিত্র ঈদুল আযহার কোরবানির আমেজ। উৎসব- আনন্দের বার্তা যেন বাতাসেও। সাথে ব্যস্ততা বেড়েছে। ব্যস্ততা কামারশালায়ও।
আর যাই হোক কোরবানি উপলক্ষে বছরে একবার কামার শালায় যেতে হয় মুসলমান সম্প্রদাযের মানুষকে। পশু জবাই কিংবা মাংস কাটার নতুন হাতিয়ার কিনতে। দা বটি ছুরি ধামা সহ নানা হাতিয়ার। যা না হলে মাংস কাটাকাটি অসম্ভব।
আর পুরনো দা বটি ছুরি হলে তো কথাই নেই। তাও যেতে হয়। মরিচা পড়া মাংস কাটার হাতিয়ারে শান দিতে হয়। আগুনে পুড়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে লবণ পানিতে চুবিয়ে শান দেয়া। তাতে ঘরের গলি ঘুপচিতে কোথাও ফেলে রাখা মাংস কাটার হাতিয়ার চকচকে ঝকঝকে হয়ে উঠে।
তবে কোরবানিতে কামারশালায় আগের সেই স্ততা নেই। নেই ক্রেতাদের ভিড়ও। হাঁপরের উঠানামা অনেকটা থমকে গেছে। আধুনিক কারখানায় তৈরি হচ্ছে পশু জবাই ও মাংস কাটার দা, ছুরি, বটি ও ধামা। সেই সাথে কেনাকাটাও।
প্রযুক্তির উন্নতি ও ঝিমিয়ে পড়া জনঅর্থনীতির কারণে সেই আগের ব্যস্ততা কামারশালায় না থাকায় অনেক পেশাদার কর্মকার ভিন্নভাবে বাঁচার চেষ্টা করছে। কেউ কেউ এরপরও আঁকড়ে আছে পুরনো এই পেশা। তাদের কাছে যাচ্ছে কোরবানির দা, বটি, ছুরি, ধামার ক্রেতারা। দামও ক্রেতাদের হাতের নাগালে।
তবে কামারশালার বাইরে এখন তৈরি দা, ছুরি, বটি, ধামার বাজারও বেড়েছে। উৎপাদন হচ্ছে আধুনিক কারখানায়। আসছে মাংস কাটাকুটির বিদেশি হাতিয়ারও। আজ মঙ্গলবার নগরের দা বটি ছুরি ও ধামার বাজার ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতা এখনো কম। তবু প্রতিবছরের ন্যায় এবারের কোরবানিতেও তারা ব্যস্ত। প্রস্তুত তারা বেচাবিক্রির জন্য। প্রস্তুতি সর্বত্র- কামারপল্লি থেকে শুরু করে তৈরি দা, ছুরি, বটি, ধামার বিক্রির দোকানগুলোও। তবে কোরবানি আরও কিছু দিন বাকি থাকায় কামারশালায় বিক্রি এখনও জমে উঠেনি।
ফিরিঙ্গি বাজারের শিমুলের কামারশালা। তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শ/দেড়শ টাকা থেকে শুরু করে হাজার, বারশ’ টাকার মধ্যে পশু জবাই থেকে মাংস কাটার সব হাতিয়ারই ক্রয় করা যাচ্ছে। তবে হাতিয়ারগুলোর লোহার মানের উপর নির্ভর করে দামের হিসাবটা।
আছদগঞ্জে শুধু মাংস কাটার হাতিয়ারই নয়। বিক্রি হচ্ছে মাংস কাটার অন্য সামগ্রীও। মাংস কাটার সময় আরও প্রয়োজন হয়- হোগলার ছাটাই, গাছের গড়(গুঁড়ি), দা-বটির ডাটি সহ সহায়ক উপকরণ। নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে এসব উপকরণও।
আছদগঞ্জের ছাটাই বিক্রেতা জয়নাল হোসেন বলেন, কাঠের গুঁড়ি আর ছাটাই
পটিয়া থেকে সংগ্রহ করেছি। আজকে এখনো বেচাবিক্রি হয়নি। গতকাল দুটা ছাটাই বিক্রি করেছি। তিনি বলেন, কোরবানের কয়েকদিন আগে অনেক বেশি বিক্রি হবে।
আমানত শাহ মাজার সড়কের দা, বটি শান দেওয়ার দোকানি জমির উদ্দিন বলেন, আমরা সারা বছর বেশিরভাগ সময় কাঁচি শান দিয়ে থাকি। তবে কোরবানি এলে মাংস কাটা ও জবাই করার দা, বটি, ধামা, ছুরি শান দিয়েও বাড়তি আয় হয়। কোরবান ঘনিয়ে এলে আয় আরো বাড়বে বলে তিনি জানান।
Discussion about this post