চট্টগ্রাম, ২১ জুলাই, ২০২২:
ওড়িশায় জন্মগ্রহণকারী সাঁওতাল জাতি সত্ত্বার নারী যিনি ওড়িশায় কাউন্সিলর হিসাবে রাজনীতি শুরু করেছিলেন- ৬৪ বছর বয়সী দ্রৌপদী মুর্মু ভারতের ১৫ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। যিনি ভারতের প্রথম উপজাতীয় রাষ্ট্রপতি এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে দ্বিতীয় মহিলা।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর দ্রৌপদী মুর্মুকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টুইটারে তিনি লেখেন, ইতিহাস রচিত হল ভারতে। ১৩০ কোটি ভারতবাসী যখন আজাদি কা অমৃত মহোৎসব পালন করছে, সেই সময় পূর্ব ভারতের আদিবাসী সমাজের এক মেয়ে দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন। এই জয়ের জন্য তাঁকে অনেক অভিনন্দন।
দ্রৌপদী স্বাধীনতার পরে জন্ম নেওয়া ভারতের সর্বকনিষ্ঠ এবং প্রথম রাষ্ট্রপতিও হবেন। ২৫ জুলাই শপথ নেবেন তিনি। রাম নাথ কোবিন্দের কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।২৪ জুলাই কোবিন্দের মেয়াদ শেষ হবে।
প্রাক্তন ঝাড়খণ্ডের গভর্নর এবং বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ-এর রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হয়ে তিনি আজ বৃহস্পতিবারের ভোট গণনায় বেশি ভোট পেয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি পদে লড়েছিলেন যশবন্ত সিনহা। তিন দফা গণনা শেষে দেখা গেছে দ্রৌপদী পেয়েছেন মোট ভোটের শতকরা ৫০ ভাগের বেশি। তার কাছে পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন বিরোধী দলের যশবন্ত সিনহা।
গত ২১ শে জুন এনডিএ-এর রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসাবে মনোনীত হন দ্রৌপদী। রাজনীতিতে তার প্রথম শুরু ১৯৯৭ সালে। রাইরংপুরে বিজেপি কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০০ ও ২০০৪ সাল পর্যন্ত ওড়িশার বিজেডি-বিজেপি জোট সরকারে মন্ত্রী হয়েছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল নিযুক্ত হন। এবং ২০২১ সাল পর্যন্ত এই পদে ছিলেন।
দ্রৌপদী বিজেপিতে ওডিশায় তফসিলি উপজাতি মোর্চার সহ-সভাপতি এবং পরে সভাপতি ছিলেন। তিনি ২০১০ সালে বিজেপির ময়ূরভঞ্জ (পশ্চিম) ইউনিটের জেলা সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ২০১৩ সালে পুনরায় নির্বাচিত হন। একই বছর তিনি বিজেপি জাতীয় কার্যনির্বাহী (এসটি মোর্চা) এর সদস্যও মনোনীত হন।
তিনি এপ্রিল ২০১৫ সাল পর্যন্ত জেলা সভাপতির পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন যখন তিনি ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল নিযুক্ত হন।
দ্রৌপদী মুর্মু মোট ভোটের শতকরা ৫১.২ ভাগ ভোট পেয়েছেন। বাকি তখনও চতুর্থ রাউন্ডের গণনা। কিন্তু এরই মধ্যে স্পষ্ট হয়ে গেছে সব। ফলে পরাজয় মেনে নেন যশবন্ত সিনহা।যশবন্ত সিনহা দ্রৌপদীর জয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
১৯৫৮ সালের ২০ জুন ময়ুরভাঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে জন্মগ্রহণ করনে দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন এবং বৃহৎ আদিবাসী গোষ্ঠী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মেয়ে।
একটি গ্রামের গ্রাম প্রধানের মেয়ে দ্রৌপদী রাজ্যের রাজধানী ভূবনেশ্বরের রামাদেবী উইমেন্স কলেজে লেখাপড়া করেছেন।
ওড়িশা রাজ্য সরকারের একজন কেরানি হিসেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ্যের কৃষি ও জ্বালানি অধিদপ্তরে একজন জুনিয়র এসিস্টেন্ট হিসেবেও কাজ করেছেন।
১৯৯৪-৯৭ সাল পর্যন্ত রাইরংপুরে শ্রী অরবিন্দ ইনটেগরাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে শিক্ষকতাও করেছেন দ্রৌপদী। ১৯৯৭ সালে তার রাজনীতিতে যোগদান। সূত্র: আন্তর্জাতিক খবর থেকে সংগৃহীত
Discussion about this post