চট্টগ্রাম, ১০ আগস্ট, ২০২২:
নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরাতে আজ থেকে শুরু হয়েছে গণপরিবহন জরিপের কাজ। আঞ্চলিক পরিবহন কমিটি (আরটিসি) বিভিন্ন রুটে চলাচলরত গণপরিহনগুলো জরিপ করবে । এই জরিপ কার্যক্রমে বাস-মিনিবাস, হিউম্যান হলারের রুট পারমিট ও ফিটনেস হালনাগাদ রয়েছে কিনা তা যাচাইবাছাই করা হচ্ছে।
আজ বুধবার, ১০ আগস্ট প্রথম দিন ১, ২ ও ৮ নম্বর রুটের বাস মিনিবাসের জরিপ করা হচ্ছে। এই জরিপ কাজ চলবে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত। ১০ আগস্ট থেকে ১, ২ ও ৮ নম্বর রুটে চলাচলরত বাস-মিনিবাস জমিয়তুল ফালাহ মাঠে কমিটির সদস্যদের কাছে নিয়ে আসতে হবে। বাস-মিনিবাস মালিককে রুট ভিত্তি কার্যক্রমের নির্দিষ্ট তারিখে গাড়ি ও গাড়ির সকল কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এর আগে ২০১৭ সালের আগস্টে রুট পারমিট ও ফিটনেস পরখ করে দেখার লক্ষ্যে নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ মাঠে কয়েকদিন ধরে জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছিল।
তথ্যমতে, ১, ২ ও ৮ নম্বর রুটে চলাচলরত বাস-মিনিবাস আগামী ১০ এবং ১১ আগস্ট, ৩ নম্বর রুটের গাড়ি ১৩ আগস্ট, ৪ নম্বর রুটের গাড়ি ১৪ আগস্ট, ৫ ও ৬ নম্বর রুটের গাড়ি ১৬ এবং ১৭ আগস্ট, ৭ নম্বর রুটের গাড়ি ২০ এবং ২১ আগস্ট, ১০ নম্বর রুটের গাড়ি ২২ এবং ২৩ আগস্ট, ১১ নম্বর রুটের গাড়ি ২৪ আগস্ট, ১৪ থেকে ১৮ নম্বর রুটের গাড়ি ২৫ আগস্ট এবং ইপিজেড রুটের গাড়ি ২৭ আগস্ট জরিপে হাজির করতে হবে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ও জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেন রাসেল গত ২৩ মে’র আরটিসি সভার ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, জরিপ চলাকালে গাড়িসহ চালকদের হাজির হতে হবে। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন রুটে কী পরিমাণ ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল করছে তারও একটি ডাটা তৈরি করা হবে।
সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, ১০ আগস্ট থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস-মিনিবাসের জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করবে সংশ্লিষ্ট কমিটি। গত ২৩ মে মেট্রো আরটিসির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।েএজন্য গঠিত হয় জরিপ কমিটি। নগর আরটিসি’র সভাপতি ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার এই কমিটি ঘোষণা করেন। সিএমপি ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার জয়নুল আবেদীনকে কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে রাখা হয়েছে।
তথ্যমতে, চট্টগ্রাম নগরীতে ১৭ টি রুটে গণ পরিবহন চলাচল করে। যেখানে চলাচল উপযোগী ১ হাজার ৫৭৫টি বাস-মিনিবাস রয়েছে।
জরিপের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন রুটে কি পরিমাণ ফিটনেসবিহীন গণপরিবহন চলাচল করছে তার একটি ডাটা তৈরি করা হবে। যেখানে এক রুটের গাড়ি অন্য রুটে চলাচল করছে কি না, সিলিং অনুযায়ী ওই রুটে সব গাড়ি চলে কি না, রুটে গাড়ি কয়টি আছে আর কয়টি নেই, রুটে নতুন কোনো গাড়ি অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজন আছে কি না, গাড়ির ফিটসেন, চলাচলের মেয়াদ, চেসিস ও ইঞ্জিন নম্বর ইত্যাদি যাচাই করা হবে।
বাস-মিনিবাস কমিটির আহ্বায়ক ও সিএমপি উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার জয়নুল আবেদীন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, নগরে কী পরিমাণ গণপরিবহন চলাচল করছে তা কিছুদিন পর পর জরিপ করা হয়। তারই অংশ হিসেবে আজ থেকে বাস-মিনিবাসগুলো জরিপ করা হচ্ছে। জরিপের পর কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক নেওয়া হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ এর আগেও কয়েক দফায় জরিপ কার্যক্রম হাতে নিয়েছিল। কিন্তু জরিপে হাজির হয়েছে খুবই কম সংখ্যক বাস-মিনিবাস ও হিউম্যান হলার। জরিপ চলাকালে গণপরিবহনের বেশিরভাগই রাজপথ থেকে উধাও হয়ে যায়। গণপরিবহনের মালিক ও পরিবহন নেতারা ফিটনেস ও রুট পারমিটবিহীন গণপরিবহনগুলোকে জরিপের বাইরে রাখতে রাজপথে নামায়। এতে নগরজুড়ে গণপরিবহনের কৃত্রিম সঙ্কটও তৈরি হয়েছিল। তবে বেশ কিছুদিন সকাল বেলায় নগরীতে অফিসগামি লোকজনকে পড়তে হচ্ছে পরিবহন সঙ্কটে। পিরিবহন সংশ্লিষ্টদের দাবি, সকালে পুলিশের যাচাইবােছাইয়ের হাত থেকে রেহাই পেতে চালকরা সকাল বেলা পর্যাপ্ত গাড়ি সড়কে বের করেন না। যে কারণে সকালে অফিসড়ামী যাত্রীদের ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হতে হয়। ছবি: সংগ্রহ
Discussion about this post