চট্টগ্রাম, ৪ অক্টোবর, ২০২২:
আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। সেপ্টেম্বর মাসে চট্টগ্রামে তিনশ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। গত চারদিনে নগরীতে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৬৮ জন। এ মৌসুমে ডেঙ্গু আক্রান্ত মারা গেছে ৬ জন।
ডেঙ্গুর এই ভয়াবহতার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন দায়ি করছে ছাদ বাগানে জমে থাকা পানিকে। চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আবুল হাশেম বলেন, ডেঙ্গুর জন্য দায়ি এডিস মশা। নগরের বিভিন্ন ভবনের ছাদ বাগার পরিদর্শন করে দেখেছি সবচেয়ে বেশি মশার প্রজনন সেখান থেকে হচ্ছে। এ নিয়ে ছাদ বাগান মালিকদের কোনো মাথাব্যাথা নেই। আমরা মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। অনেককে জরিমানা করা হচ্ছে। আমরা চাচ্ছি মানুষ সচেতন হোক।
সূত্র জানায়, এই চারদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৬৮জন যা পুরো আগস্ট মাসের সমান। যে কারণে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ বিভাগ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিরতি দিয়ে পর পর অল্প বৃষ্টি মশার প্রজননবান্ধব পরিবেশ তৈরি করছে। তাই ব্যাপকহারে মশক নিধন, প্রজননস্থল ধ্বংস ও জনসচেতনা সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। না হলে ডেঙ্গুর বিস্তার আরো বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে মশার মৌসুম শুরুর থেকে নির্মাণাধীন ভবন, ছাদ বাগান ও সম্ভাব্য মশার প্রজনন উৎস ধ্বংসে কাজ করছে সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল নগরীতে এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধে অভিযান ৪ ব্যক্তিকে ১৯ হাজার টাকা জরিমানা। এর মধ্যে গরীবুল্লাহ শাহ হাউজিং সোসাইটির ৩টি বাড়ির ছাদ বাগানে এডিস মশার বংশ বিস্তারে জমাটবদ্ধ পানির উৎস পাওয়ায় ৩ ব্যক্তিকে ১৪ হাজার টাকা ও ফ্লোরাপাস রোডে ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে নির্মাণ সামগ্রী রেখে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার অপরাধে ১ ব্যক্তিকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সাথে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ইতিমধ্যে প্রায় ৩ হাজার লিটার এডালটিসাইড কিনেছে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরীক্ষায় শতভাগ কর্যকর বলে প্রমাণ করার পর তা নগরের এডিশ মশার প্রজন্নস্থলে স্প্রে করা হচ্ছে।
চসিক জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ছাদবাগান, নির্মাণধীন ইমারতসহ বিভিন্ন বসতবাড়িতে অভিযান চালানোর আগে থেকে মাইকিং, লিফলেটও বিতরণ করেছে। র্যালি, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী, দোকান পাটে, বাসাবাড়িতে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।
যেখানে উৎপত্তিস্থল এডিস মশার: সাধারণত বর্ষার মধ্যে জুলাই থেকে অক্টোবরে মাঝে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে। পরিষ্কার ও বদ্ধ পানি এডিশ মশার প্রজননক্ষেত্র। বাসাবাড়ির আশেপাশে ডাবের খোসা, ফুলের টব, ছাদ বাগান, ফ্রিজের ট্রে, এসির জমা পানি, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিক বোতল ও পানির ড্রামে যাতে তিন দিনের বেশি সময় পানি জমে না থাকে সে দিকে সকলকে খেয়াল রাখতে হবে। ডেঙ্গ্ ুভাইরাসজনিত রোগ। সিটি কর্পোরেশন জ্বর বা ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথে চসিক জেনারেল হাসপাতাল ও আরবান হেলথ সেন্টারে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। ছবি: সংগ্রহ