চট্টগ্রাম, ২ নভেম্বর, ২০২২:
রোগীদের জটিল অপারেশনে সেবা দ্রুত নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের থোরাসিক সার্জারি বিভাগে চালু হয়েছে আলাদা অপারেশন থিয়েটার (ওটি)। নতুন ওটির মাধ্যমে এখন প্রতিমাসে অন্তত ৮টি অপারেশন বেশি করা সম্ভব হবে। তাতে অপারশনের রোগীদের অপারেশনের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হবে না। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ করে খাদ্য নালী, শ্বাসনালী, ফুসফুস, ডায়াফ্রামসহ বুকের যাবতীয় অপারেশন থোরাসিক সার্জারি বিভাগের অধীনেই হয়ে থাকে। যেমন- ফুসফুসের ক্যান্সার বা খাদ্যনালীর ক্যান্সারের মতো জটিলতায় বড় ধরণের অপারেশন এই থোরাসিক সার্জারির অধীনেই করা হয়ে থাকে।
গত সোমবার থোরাসিক বিভাগটিতে অপারেশন থিয়েটার উদ্বোধন করা হয়।
গত সোমবার থোরাসিক সার্জারি বিভাগে উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান। থোরাসিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. জাকির হোসাইন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চমেক উপাধ্যক্ষ ডা. হাফিজুল ইসলাম, সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মতিয়ার রহমান, অ্যানেসথেসিয়া (আইসিইউ) বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশিদ, কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. সাইফুল হক।
এতদিন ধরে থোরাসিক বিভাগটির অধীনে অপারেশন করা হলেও তা অনিয়মিত ছিল জানিয়ে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, আলাদা ওটি না থাকায় থোরাসিক সার্জারির চিকিৎসকরা অন্য বিভাগের ওটিতে অনিয়মিতভাবে এই অপারেশন করতেন। তবে এখন আলাদা ওটি পাওয়ায় বিভাগটি সপ্তাহে দুদিন করে নিয়মিত অপারেশন করার সুযোগ পাবে। এর ফলে গরীব রোগীরা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন।
থোরাসিক সার্জারির প্রধান ডা. জাকির হোসাইন ভূঁইয়া বলেন, সার্জারি বিভাগের একটি কক্ষে আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করছি। আমাদের আলাদা রোগী ভর্তি রাখার ব্যবস্থাও এখনো হয়নি। যদিও আমাদের ৮০-১০০ জন রোগী বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি থাকে। এতদিন আমরা অন্য বিভাগকে বলে কয়ে মাসে দুয়েকটি অপারেশনের সুযোগ পেতাম। কিন্তু আলাদা ওটি পাওয়ায় এখন মাসে অন্তত ৮টি অপারেশন করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে রোগীরা উপকৃত হবেন। রোগীদের অপেক্ষাও কমবে।
থোরাসিক সার্জারি কী: বক্ষব্যাধি নিরাময়ে যেসব অপারেশন প্রয়োজন সেগুলো সেসবে থোরাসিক সার্জারি বলে।
যক্ষ্মা কিংবা ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষের চিকিৎসা করেন একজন বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ। ফুসফুসের যে কোন সমস্যা কিংবা শ্বসনতন্ত্রের সমস্যার সার্জারির মাধ্যমে সমাধানের জন্য বক্ষব্যাধি সার্জনের শরণাপন্ন হতে হয়। মেডিকেলের পরিভাষায় একজন বক্ষব্যাধি সার্জনকে থোরাসিক সার্জন বলা হয়।
মূলত সরকারি পর্যায়ে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে টারশিয়ারি পর্যায়ের হাসপাতাল পর্যন্ত সব ধরনের হাসপাতালেই একজন বক্ষব্যাধি সার্জন কাজ করতে পারেন। সরকারি এবং বেসরকারি – দুই ধরনের হাসপাতাল বা প্রতিষ্ঠানেই বক্ষব্যাধি সার্জন নিযুক্ত থাকেন। কিন্তু বক্ষব্যাধি সার্জন থাকলেও থোরাসিক সার্জারি জটিল বিষয়। এজন্য প্রয়োজন হয় আলাদা ওটি রুমও।
Discussion about this post