চট্টগ্রাম, ৭ ডিসেম্বর, ২০২২:
ভারত বনাম বাংলাদেশ- তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিল বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচের পর দ্বিতীয় ম্যাচেও বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়ে দিয়েছে। আজ ৭ ডিসেম্বর ৫ রানে ভারতকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় অন্য এক নতুন অধ্যায় রচনা করল টাইগাররা। প্রথমে টস জিতে বাংলাদেশ ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিলেও শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদের। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজের শতক ও মোহাম্মদুল্লা রিয়াদের অর্ধশতক সাথে নাসুম আহমেদের দানবীয় ব্যাটিং তাণ্ডব বাংলাদেশকে ভালো একটি রানের পাহাড় গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
ব্যাটিং শেষে বাংলাদেশের দুর্দান্ত বলিং প্রথমেই ভারতের টপঅর্ডার ও মিডল অর্ডারকে ধরাশায়ী করে। কিন্তু শ্রেয়াস আইয়ার ও অক্ষর প্যাটেলের সুন্দর একটি পার্টনারশিপ গড়ে তুললেও সেই পার্টনারশিপে বাংলাদেশ হারানোর মত স্কোর গড়তে পারেনি তারা। দুজনের ১০৭ রানের জুটিতে ১০২ বলে ৮২ রান করেন আয়ার। আর ৫৬ বলে ৫৬ রান করা অক্ষর ক্যাচ দেন সাকিব আল হাসানের হাতে। তখনও তারা বাংলাদেশের দেয়া টার্গে ট থেকে অনেক দূরে। পরে রোহিত শর্মার দানবীয় ব্যাটিং ম্যাচ হারানোর ভীতি তৈরি করলেও টাইগারদের দুর্দান্ত বোলিং রোহিতকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে দেয়নি। অথচ রোহিত ক্রিজে দাঁড়ানো অবস্থায় যখন ১২ বলে ৪২ রান দরকার তখন মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের সিরিজ জয় আর বেশি দূরে নয়। কিন্তু রোহিত এমনভাবে খেলা ঘুরিয়ে দেন যখন তাদের শেষ বলে দরকার ছিল বরাবর একটি ছক্কা। একজন ঝানু ব্যাটসম্যান হিসাবে রোহিতের কাছ থেকে শেষ বলে ছক্কার আশা খুব বড় কিছূ ছিল না। অর্থাৎ শেষ বল পর্যন্ত টাইগারদের কাছে বিজয় ধরা দিবে এমন- কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। অর্থাৎ সেই ১২ বলে ৪২ রানের জায়গা থেকে পুরো ম্যাচ ভারতের দিকে নিয়ে যান ভারতের অধিনায়ক রোহিত। রোহিত এতটা আশা তৈরি করতে পারত না। কারণ এর মধ্যে রোহিতের দুইটি ক্যাচ মাটিতে ফেলে দিয়েছেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। তবু দু্ই দেশের দর্শকদের টান টান উত্তেজনায় রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। শুধু ম্যাচ জয় নয়, সিরিজ জয়ের পালাও শেষ হয় বাংলাদেশের।
তবে দর্শকদের মন কেড়ে নিয়েছে এই ক্রিকেট ম্যাচ। কারণ. কী ছিল না এই ম্যাচে- উত্তেজনা, ভয়, স্নায়ুচাপ, স্টেডিয়াম ভরা দর্শকের সমর্থন আরো কত কি! সব মিলিয়ে যেন পরিপূর্ণ ও সুন্দর একটি ম্যাচ উপহার দিয়েছেন টাইগাররা। দেশের ক্রিকেট ও টাইগার বাহিনীর বিশ্বাসের ভিত এতে আরো মজবুত হয়েছে।
তবে বাংলাদেশের জয়ে আলাদা করে বলতে হবে মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ আর মেহেদি হাসান মিরাজের কথা। কারণ ১৯ ওভারে বাংলাদেশের ছয় উইকেট তুলে নেন ভারতীয় বোলাররা। তখন রান মাত্র ৬৯। সেখান থেকে রিয়াদ ও মিরাজের জুটিতে রান আসে ১৪৮। তার আগে মাহমুদউল্লাহ ফিরলেন ৯৬ বলে ৭৭ রান করে। শেষ ৮৩ বলে ১০০ রানে অপরাজিত ছিলেন মিরাজ। ইনিংসে ৮টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৪টি ছক্কা। যখন বাংলাদেশ ১০০ রান করতে পারবে কিনা সন্দেহ হয়েছিল সেখান থেকে ভারতকে ২৭২ রানের টার্গেট দেওয়াটা ছিল বিস্ময়কর বৈকি। অর্থাৎ ৭ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে বাংলাদেশের রান দাঁড়ায় ২৭১। এই কৃতিত্ব বলতে গেলে পুরোটাই মিরাজ ও মাহমুদ উল্লার। তবে মিরাজ ও মাহমুদ উল্লার কীর্তিকে অম্লান হয়ে উঠে মোস্তাফিজের শেষ বলে। যে বলটিতে ভারতের পরাজয় লেখা ছিল।
Discussion about this post