চট্টগ্রাম. ৮ অক্টোবর, ২০২২:
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির কথিত সরকার উৎখাত কর্মকাণ্ডের নামে অনুষ্ঠিতব্য সমাবেশকে কেন্দ্র করে আবারো নাশকতা, অরাজকতা ও জ্বালাও-পোড়াও কাণ্ডের আলামত সুষ্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ. জ. ম. নাছির উদ্দীন। যে কারণে নগরীর ১৫টি থানা, ৪৪টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে এবং ১৩২ টি ইউনিটের নেতৃত্বকে নগরবাসীর জানমাল রক্ষায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি ও সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। ৮ ডিসেম্বর রাতে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
রাজধানী ঢাকায় বিএনপির সমাবেশস্থল নিয়ে পাল্টাপাল্টি চলছে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে। এর মধ্যে গত বুধবার রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ও বিএনপির মধ্যে সংঘাত সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত, বহু হতাহত ও গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির নেতাকর্মীদের।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় চট্টগ্রামে বিএনপির মিছিল থেকে গাড়িতে আগুন লাগানো ও নাশকতা করা হয় বলে সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানানো হয়।
৮ ডিসেম্বর যুক্ত বিবৃতিতে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়ার পরও তারা গতকাল থেকেই ঢাকার পল্টনে রাজপথে অবৈধ অস্ত্র, বিস্ফোরক এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নিয়েছে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাধা দিতে গেলে তারা উচ্ছৃঙ্খল হয়ে উঠে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাধারণ জনগণের উপর হামলা চালায় এবং ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু করে দেয়। এতে সুষ্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, বিএনপি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির মহড়া শুরু করে দিয়েছে। এই কর্মকা- সমগ্র দেশবাসীর জন্য অশনিসংকেত। আমরা এই অবস্থায় চুপ করে থাকতে পারি না। আমরা তাদেরকে অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করবো এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশে থাকবো। বিবৃতিতে স্থানীয় নেতৃত্বকে নির্দেশনা দেওয়া হয় যে, তারা আজ থেকে যার যার নির্দিষ্ট এলাকায় সার্বক্ষণিক প্রহরায় থাকবেন এবং কোনরকম অঘটনের আভাস পাওয়া মাত্র তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করবেন সর্বোপরি জনগণকে সাথে নিয়ে নাশকতাকারীদের প্রতিহত করার মানসিক ও রাজনৈতিক শক্তি অর্জনের প্রস্তুতি শুরু করে দিতে হবে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এলাকায় যারা চিহ্নিত দুষ্কৃতিকারী বা কোনো সন্দেহভাজনকে দেখামাত্র তাকে ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ইতোমধ্যে গত মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম নগরীর আসকার দিঘির পাড়সহ দু’একটি এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। কোথাও কোথাও ঝটিকা মিছিল বের করে আতংক সৃষ্টি করেছে। তাই এই পরিস্থিতিতে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার সময় এসেছে।
এদিকে বিএনপির সমাবেশস্থল নির্ধারণে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের কার্যালয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে। ২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিএনপি নয়া পল্টনের বিকল্প হিসাবে কমলাপুর স্টেডিয়ামে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে। অন্যদিকে বিএনপিকে মিরপুরের বাংলা কলেজ মাঠে সমাবেশ করার প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেখান থেকে বেরিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু সাংবাদিকদের কাছে বৈঠকের আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরেন।
এদিকে ৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের এক যৌথ সভায় যোগ দিয়ে দেশে যাতে কোনো অরাজকতা না ঘটে সেজন্য দলের নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের প্রতিটি এলাকায় প্রস্তুত থাকতে হবে যাতে তারা (বিএনপি-জামায়াত) আর নির্যাতনের আশ্রয় নিতে না পারে।
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, সকলের মনে রাখা উচিত যে আওয়ামী লীগ কারও পকেট থেকে আসেনি এবং এটি দেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এর অস্তিত্ব গভীরে প্রোথিত।
Discussion about this post