চট্টগ্রাম, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২:
লুসাইল স্টেডিয়াম এখন ইতিহাসের আরেক নাম। ১৮ নভেম্বর রাতে, ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা দিয়ে এই ইতিহাস। এই ইতিহাসে যাদের নাম লেখা থাকবে তারা ফুটবলের মহা তারকা লিওনেল মেসি ও এমবাপ্পে সহ ফান্স, আর্জেনন্টিনার বহু ফুটবল তারকার নাম। যারা ফুটবলের মহারণ এই মাঠে সমাপ্ত করেছে। বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচ তাও আবার ফাইনাল। আজর্জেন্টিনা এই ম্যাচ জিতে নেওয়ার আগে দর্শকদেরও স্নায়ুচাপে রেখেছিল। ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিতে হয়েছে।এই না হলে কী বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল হয়।
কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে দুই ফাইনালিস্ট আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স, খেলা শুরু হয় বাংলাদেশ সময় রাত ৯ টায়।শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলছিল আলবেসেলেস্তেরা। এই যেন নতুন আর্জেন্টিনা। অন্য কোনো ম্যাচে এমন আক্রমণ করতে দেখা যায়নি আর্জেন্টিনাকে। ২৩ মিনিটের মাথায় তারা সাফল্য ছোঁয়া পান। ফ্রান্সের বক্সে আনহেল ডি মারিয়াকে ফাউল করে উসমান দেম্বেল। ফ্রান্সের বিপক্ষে পেনাল্টি দেন রেফারি। এবং ২৩ মিনিটের মাথায় মেসির পেনাল্টি শটে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু এতেই শেষ না ৩৬ তম মিনিটে এলিস্টারের এসিস্টে ডি মারিয়া দারুণ একটি শটে আর্জেন্টিনা ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলে। প্রথমার্ধ শেষ হয়। বিরতির পর ৬৪ তম মিনিটে মারিয়াকে তুলে নিয়ে একিউনাকে নামায় স্কালোনি। একইভাবে দুইপক্ষই আক্রমণ চালাতে থাকে। ফাইনালের নাটক শুরু শেষের দিকে। ৮০ মিনিটের মাথায় আর্জেন্টিনার বক্সে ওতামেন্ডির ফাউলে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। এম্বাপ্পে স্কোর ২-১ এ নিয়ে যান। পরের মিনিটে কিছু বুঝতে না বুঝতেই এম্বাপ্পে দারুণ একটি শট করে দলকে ২-২ স্কোরে সমতায় নিয়ে যায়। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। এবং ১০৮ মিনিটের মাথায় দারুণ এক অসাধারণ গোলে দলকে আবারো এগিয়ে নিয়ে যান লিওনেল মেসি। কিন্তু এই গোল শোধ করতে বেশিক্ষণ লাগেনি ফ্রান্সের। আর্জেন্টিনার বক্সে মন্টিয়েলের হাতে বল লাগে এবং পেনাল্টির ইশারা দেন রেফারি এবং আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ১১৮ মিনিটে পেনাল্টি শটে নিজের হ্যাট্রিক করে নেন এম্বাপ্পে। স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ৩-৩। প্রথম ৮০ মিনিটে ম্যাচ যতটা সহজ মনে হচ্ছিল ম্যাচ ততটা জটিল হয়ে পড়ল। ম্যাচ গিয়ে গড়াল পেনাল্টি শুট আউটে। ম্যাচ নির্ভরতা অনেকখানিই গোল কিপারের উপর গিয়ে পড়ে। আর্জেন্টিনার এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নিজের জাত চিনিয়েছেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। পেনাল্টি শুট আউটে ৪-২ গোলে জিতে যায় আলবেসেলস্তেরা। ৩৬ বছরের বিশ্বকাপ খরা কাটিয়ে নিজের দেশকে বিশ্বকাপ উপহার দিয়েছেন মেসিরা। শুধু মেসিরাই পারে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ হেরে এভাবে ঘুরে দাঁড়াতে শুধু। সাথে গোল্ডেন বল তুলে নিয়েছেন নিজের নামে। নিজের শেষ বিশ্বকাপে সবটুকু উজাড় করে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ নিজের নামে করে নিয়েছেন তিনি। সব আক্ষেপ গুছিয়ে দিয়ে কোটি কোটি আর্জেন্টিনা সমর্থকদের আনন্দ উদযাপনের সুযোগ করে দিয়েছেন।
Discussion about this post