চট্টগ্রাম, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩:
যারা এই এফপিওতে লগ্নি করেছেন তাঁদের সব টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আদানি গোষ্ঠি। এই ঘোষণার মাধ্যমে নাটকীয়ভাবে দ্বিতীয় দফার শেয়ার (এফপিও) বিক্রি থেকে পিছিয়ে এল আদানি গোষ্ঠি। বুধবার রাতে এক বিবৃতিতে তারা জানায়, অনিশ্চিত বাজারে এখনই তারা আর এফপিও নিয়ে এগোবে না।
এরপর বৃহস্পতিবার সকালে ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানি সংস্থার সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘লগ্নিকারীদের স্বার্থ সবার ওপরে। বাকি সবকিছুই গৌণ। বুধবারের শেয়ারবাজারের অস্বাভাবিক ওঠানামা বিবেচনা করে সংস্থার বোর্ড ঠিক করেছে, নৈতিক দিক থেকে এফপিও নিয়ে এগোনো উচিত হবে না।’
আদানি গ্রুপের শেয়ারের মূল্যে এক সপ্তাহব্যাপী দরপতন শুরু হয় যখন একজন আমেরিকান শর্ট বিক্রেতা সংস্থাটির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তোলেন। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ রিপোর্ট প্রকাশের পর সপ্তাহে 90 বিলিয়ন ডলারের বেশি বাজার মূল্য হারিয়েছে। যেখানে আদানি গ্রুফের সাতটি তালিকাভুক্ত কোম্পানি রয়েছে।
এদিকে এক ভিডিও বার্তায় গৌতম আদানি বলেছেন, বাজার স্থিতিশীল হলে, আমরা আমাদের পুঁজিবাজার কৌশল পর্যালোচনা করব। তিনি বলেছেন, আমার জন্য, আমার বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি এবং অন্য সবকিছুই গৌণ।
তিনি আরও বলেন, “অতএব বিনিয়োগকারীদের সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে দূরে রাখতে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই সিদ্ধান্ত আমাদের বিদ্যমান কার্যক্রম এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনার উপর কোন প্রভাব ফেলবে না। আমরা সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং বিতরণের উপর ফোকাস চালিয়ে যাব।
আদানি এন্টারপ্রাইজ ২০ হাজার কোটি রুপির এফপিও বাজারে ছেড়েছিল। গত মঙ্গলবার ছিল সেই শেয়ার কেনার শেষ দিন। শেষ পর্যন্ত বিদেশি লগ্নিকারীদের বদান্যতায় পুরো শেয়ার বিক্রি হয়ে গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনের পর আদানি সাম্রাজ্যে যে ধস নামে, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারও।s by
বুধবারই সেই শেয়ারের দরপতন হয় সাড়ে ২৮ শতাংশ। বাজারবিশেষজ্ঞদের মতে, এ দরপতনের ফলে এফপিওতে লগ্নিকারীরা ইতিমধ্যেই ৩২ শতাংশ লোকসানের মুখ দেখেছেন। বুধবার বাজার বন্ধের সময় আদানি গোষ্ঠীর মোট ১০ সংস্থার মোট শেয়ারমূল্য এক দিনে গড়ে ১৪ শতাংশ পড়ে যায়। গত এক সপ্তাহে এই লোকসানের পরিমাণ গড়ে মোট ৩৯ শতাংশ।
এ পরিস্থিতিতেই গৌতম আদানির বিবৃতি। বৃহস্পতিবার সকালে সেই বিবৃতিতে এফপিও প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা জানালেন। ভারতীয় বাজার নিয়ন্ত্রকরা গত সপ্তাহের ঘটনা নিয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেননি। কিন্তু, রয়টার্স বুধবার রিপোর্ট করেছে যে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি) শেয়ারের দামের পতন পরীক্ষা করছে এবং মঙ্গলবারের শেয়ার বিক্রির সম্ভাব্য অনিয়মও দেখছে।
বুধবার শেয়ার বিক্রি বন্ধ করা ভারতের অন্যতম বিশিষ্ট শিল্পপতির জন্য একটি বিশাল ধাক্কা ছিল। মাত্র এক সপ্তাহ আগে, আদানির বিস্তৃত গোষ্ঠীর মূল্য ছিল 200 বিলিয়ন, যা তাকে এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি করে তুলেছে। গত বছরের এক পর্যায়ে, তিনি এমনকি জেফ বেজোসকে টপকে বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি হয়েছেন।
এখন তিনি আর এক জায়ান্ট ব্যবসায়ী মুকেশ আম্বানির পিছনে চলে গেছেন। সূত্র: বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম
Discussion about this post