চট্টগ্রাম, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩:
চট্টগ্রামের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে বাংলাদেশের স্বপ্নের গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের মূল কাজ আগামী জুলাই- আগস্টে শুরু হবে। ইতিমধ্যে ড্রয়ই, ডিজাইন ও টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের বড় বাধা ছিল জমি বুঝে পাওয়া। সেই সমস্যাও সমাধান হয়ে গেছে।
প্রকল্পের পরিচালক মীর জাহিদ বলেন, ১৭ হাজার ৭ শ ৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য এই গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ। যেখানে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে জাইকা।
প্রকল্প পরিচালক মীর জাহিদ হাসান জানান, দরপত্র প্রস্তুতির কাজ শেষ হয়েছে। দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। জুনে এই কাজ শেষ হলে জুলাই-আগস্ট গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের মূল কাজ শুরু হবে।
এরমধ্যে ১৪.৩ কিমি. দৈর্ঘ্য ও ২৫০ মিটার প্রস্থের, গভীরতা ১৮.৫ মি. চ্যানেল নির্মাণ শেষ হয়েছে।
জেটি নির্মাণ, ইয়ার্ড নির্মাণ, ভবন নির্মাণ ও আ নুসাঙ্গিক নির্মাণ কাজ শুরু হবে দরপত্র শেষ করে। বন্দরটির দুটি জেটি নির্মাণ করা হবে। দুটি জেটি নির্মাণের পর অপারেশনে যেতে চায় এই বন্দর। প্রথম পর্যায়ে একটি জেটি হবে ৫০ একর জায়গায় ৪৬০ মিটার দৈর্ঘ্যর কন্টেইনার জেডি। একই সাথে নির্মাণ হবে ২৯.১৫ একরের ৩০০ মিটার মাল্টিপারপাস টার্মিনাল।
এর আগে বন্দর কর্তৃপক্ষকে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্পের জন্য ২৮৩.২৭ একর জমির দখল বুঝিয়ে দিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
বন্দর সূত্র জানায়, মাতাবাড়িতে ২০২৫ সালের মধ্যে জাহাজ ভেড়াতে চাই বন্দর কর্তৃপক্ষ।যেখানে ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং প্রায় ১৬-১৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারবে। এতে প্রতিটি জাহাজ ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার কন্টেইনার পরিবহন করতে পারবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ ১০ মিটার ড্রাফট এবং ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়তে পারে।
২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার প্রকল্পটিতে ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান। বাকি অর্থের মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা, পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
সম্প্রতি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি টিম মাতারবাড়ি এলাকায় পরিদর্শনে যান। এতে বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, একসময় এটি এই অঞ্চলের ‘আঞ্চলিক হাব’ হিসেবে পরিণত হবে। এখান থেকে কন্টেইনারবাহী পণ্য ও জাহাজ সরাসরি গন্তব্যে পৌছানো সম্ভব হবে। যেমন এখান থেকে ইউরোপ, চায়না, মিডল ইস্ট ও আমেরিকাতে পাঠাইতে পারবো। বর্তমানে ইউরোপের গন্তব্যে কার্গো পৌছাদে ৪৩ দিন সময় লাগে, সেখানে ১৬-১৭ দিনে পৌছানো সম্ভব হবে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরকে একটি অনন্য বন্দর হিসাবে্ ব্রান্ডিং করার লক্ষও আছে সরকারের। যেটির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও বেগবান হবে।
Discussion about this post