চট্টগ্রাম, ৬এপ্রিল, ২০২৩:
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ট্রায়াল সম্পাদনের অপেক্ষায়। তারপরই খুলে দেওয়া হবে টানেল। তবে ট্রায়ালের আগে আরও কিছু কাজ সম্পাদন করতে হবে। ইতিমধ্যে ৯৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
এগিয়ে চলছে টোল প্লাজা, ফায়ার স্টেশনের নির্মাণ কাজও। দুই পাড়ে সংযোগ সংযুক্ত সড়কের সম্প্রাসরণের কাজও এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ইতিমধ্যে অ্যাপ্রেচ রোডের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
টানেলের প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, এ মুহূর্তে চলছে স্পর্শকাতর সিকিউরিটি সেফটির কাজ। সেই সঙ্গে টানেলের দুই প্রান্তে ফায়ার স্টেশন, স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণসহ অনেকগুলো অক্সিলিয়ারি ওয়ার্ক চলছে এখন। যখনই টানেল উদ্বোধন হবে তখনই টানেল যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য বহু আগেই পতেঙ্গা অংশ ও দক্ষিণাংশের সড়ক যোগাযোগের কাজ শেষ করা হয়েছে।
নগরের আউটার রিং রোড এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে আনোয়ারা অংশে ক্রসিং পর্যন্ত ছয় লেনের সড়কের চারলেনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ক্রসিং থেকে পটিয়া বাইপাস পর্যন্ত সড়ক বর্ধিত করা হয়েছে। বিকল্প সড়ক হিসাবে আনোয়ারা-বরকল-চন্দনাইশ সড়কও বর্ধিত করা হচ্ছে।
তবে টানেলে উদ্বোধনের সাথে সাথে এক্সপ্রেসওয়ে চালুর চিন্তা রয়েছে। টানেলের মুখে যেন যানজট না লাগে সে পরিকল্পনায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালুর কথা ভাবা হচ্ছে।
ঘারুনুর রশিদ বলেন, এটি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়ার জন্য বেশকিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। কারণ টানেল চালুর পূর্ব-প্রস্তুতি হিসেবে আমাদেরকে প্রি-কমিশনিং, কমিশনিং এবং বেশকিছু পর্যায়ের ট্রায়াল সম্পাদন করতে হবে।
নির্মাণাধীন টানেলের দৈর্ঘ্য হবে ৩ দশমিক ৪০ কিলোমিটার। এ ছাড়া ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটারের একটি অ্যাপ্রোচ সড়কের পাশাপাশি একটি ৭২৭ মিটার ওভারব্রিজ রয়েছে, যা মূল শহর, বন্দর ও নদীর পশ্চিম দিককে এর পূর্ব দিকের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।
এদিকে টানেলের সম্ভাব্য উদ্বোধনকে মাথায় রেখে শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত সংযোগ সড়কের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সওজ কর্তৃপক্ষ যেকোনো উপায়ে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ছয় লেন সড়কের চার লেন রাস্তা পুরোদমে চালু করার টার্গেট নিয়ে কাজ করছে। তবে চাতরী চৌমুহনীসহ সড়কের তিনটি স্পটে উড়াল সেতুর কাজ প্রস্তাবনায় এলেও তা এখনই হচ্ছে না। পরবর্তীতে আলাদা প্রকল্পের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন হবে বলে জানা গেছে।
সওজের ছয় লেন সড়কের প্রকল্প কর্মকর্তা প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানান, সবকিছু হচ্ছে টানেল মেগা প্রকল্পের প্রয়োজন ও বাস্তবতাকে গুরুত্ব দিয়ে। আনোয়ারা থেকে শিকলবাহা ক্রসিং পর্যন্ত ছয়লেনের সড়কের চারলেনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কালাবিবির দীঘি থেকে আনোয়ারা হয়ে চন্দনাইশ কলেজ গেইট পর্যন্ত বিকল্প সড়কের প্রস্তাবনা আছে। প্রস্তাবিত সড়কের নানাদিক যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু টানেলের সমীক্ষা প্রতিবেদনে, টানেলের সুফল কাজে লাগাতে আনোয়ারা প্রান্তের পিবি সড়ককে ছয়লেন ও আনোয়ারা-বাঁশখালী সড়ককে চারলেনে উন্নীত করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু টানেল চালুর অপেক্ষায় থাকলেও পিএবি সড়কের কাজ এখনো শেষ হয়নি। কোনো উদ্যোগ এখনো নেওয়া হয়নি আনোয়ারা-পেকুয়া সড়ক উন্নয়নেরও।
Discussion about this post