চট্টগ্রাম, ৬ এপ্রিল, ২০২৩:
আন্তঃসীমান্ত নদী তিস্তা থেকে পানি সরানোর জন্য ভারতের নতুন পরিকল্পনা সম্পর্কে নয়াদিল্লির কাছ থেকে দুই সপ্তাহ আগে জানতে চেয়েও ঢাকা এখনো কোনো উত্তর পায়নি।
ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণ নদীর পানি সরানোর জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উজানে আরও দুটি খাল খননের পরিকল্পনা রয়েছে। আজ ৬ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলি সাবরিন বলেন, ‘তিস্তার পানি সরানোর নতুন পরিকল্পনার বিষয়ে আমরা দিল্লির কাছ থেকে কোনো উত্তর পাইনি।
১৯ মার্চ, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছিলেন যে তারা আন্তঃসীমান্ত নদী থেকে পানি সরানোর জন্য ভারতের পরিকল্পনা জানতে নয়াদিল্লিতে একটি নোট পাঠিয়েছিলেন।
তিস্তা হিমালয়ের হিমবাহ থেকে প্রবাহিত একটি শক্তিশালী নদী, এখন বেশিরভাগই বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এবং বর্ষাকালে উজানের পানি উপচে পড়ে, যা উত্তর অঞ্চলে ঘন ঘন বন্যার কারণ হয়। ভারত- বাংলাদেশের অভিন্ন নদীর উজানে ভারতের নতুন প্রকল্প তিস্তার প্রবাহকে আরও কমিয়ে দেবে বলে- পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।
তিস্তা নদী নিয়ে ভারতের সঙ্গে পানিবণ্টন চুক্তি হওয়ার জন্য বাংলাদেশ কয়েক দশক ধরে অপেক্ষা করছে।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে ভারতীয় রাজ্যের কৃষকদের জন্য জলের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে এই ধরনের একটি চুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন।
তিস্তার পানি সরানোর জন্য ভারতের নতুন পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহেদ ফারুক ১৬ মার্চ বলেছিলেন- বাংলাদেশ, যেটি ভারতের সাথে একটি নিম্ন নদীপ্রধান দেশ হিসাবে কমপক্ষে ৫৪টি নদী ভাগ করেছে, তারা আরও বেশি জল সরানোর পরিকল্পনা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানে না।
তিনি বলেন, তিস্তা নদীর পানি সরানোর এ ধরনের পদক্ষেপ বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক হবে।
নদী গবেষকরা আশঙ্কা করছেন, পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা থেকে পানি সরানোর জন্য আরও দুটি খাল খননের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের প্রায় দুই কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করবে।
জল উন্নয়ন বোর্ডের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারের প্রায় এক লক্ষ কৃষককে পরিষেবা দেওয়ার জন্য ভারত রাজ্য সরকারের আরও দুটি খাল খননের সর্বশেষ ঘোষণার আগে চারটি খাল নির্বিচারে পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা থেকে জল প্রত্যাহার করছে।
ডব্লিউডিবির তথ্য অনুসারে তিস্তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রায় ১১৫ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়, যার মধ্যে লালমনিরহাটে বাংলাদেশ নির্মিত তিস্তা ব্যারাজ থেকে ১৩ কিলোমিটার উজানে রয়েছে।
ছবি: সংগ্রহ
Discussion about this post