চট্টগ্রাম, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩:
চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়ায় মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ও নিষিদ্ধ ট্যানারি বর্জ্য মিশিয়ে পোল্ট্রি খাদ্য তৈরির অভিযোগে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা ও জব্দকৃত পণ্য ধ্বংসের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাকলিয়া থানা পুলিশ রাজাখালী ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন ফাইভ স্টার গলির জনৈক হাজী সালাউদ্দিনের মালিকানাধীন পোল্ট্রি খাদ্য তৈরির কারখানাসহ তিনটি গুদামে অভিযান চালায়। এসময় ট্যানারি বর্জ্য ও নিষিদ্ধ মালামাল মিশিয়ে পোল্ট্রি খাদ্য উৎপাদনের সত্যতা পেয়ে পুলিশ কারখানা ও গুদামগুলো তালাবদ্ধ করে রাখে। পরদিন অর্থাৎ গত ২৮ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কারখানার মালিক হাজী সালাউদ্দিনকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন। এসময় ট্যানারি বর্জ্য মিশ্রিত পোল্ট্রি ফিডগুলো নিকটস্থ কর্ণফুলী তীরে ধ্বংস করা হয়।ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত বলেন, অভিযানকালে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাৎক্ষণিক কারখানার মালিক মো. সালাউদ্দিনকে নগদ দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ক্ষতিকর পোল্ট্রি ফিডগুলো ধ্বংস করার নির্দেশ দেয়া হয়।
তবে হাজী সালাউদ্দিন দীর্ঘদিন যাবৎ রাজাখালি ফায়ার সার্ভিসের আশেপাশে ভেজাল পোল্ট্রি ফিডের ব্যবসা করে বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক হয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় শ্রমিকরা জানান, হাজী সালাউদ্দিন মাঝির কারখানায় এটা নতুন কিছু নয়। বহু বছর ধরে নানা কিছু মিশিয়ে মুরগির খাদ্য তৈরি হয়ে আসছে। বাজারে নিষিদ্ধ মিটবন না পেলে পোল্ট্রি খাদ্যে ট্যানারির বর্জ্য মেশানো হয়।
স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বেশ কয়েকজন আমদানিকারক হাজী সালাউদ্দিনকে পোল্ট্রি ফিড বানানোর নিষিদ্ধ উপকরণগুলো সরবরাহ করে। সালাউদ্দিন ও তার ছেলে সোহাগ, ভাতিজা সাদ্দাম কারখানায় এসব উপকরণের সাথে মিটবন, ট্যানারি বজ্যৃ, ইয়েলো প্রোটিনের মত ক্ষতিকারক উপকরণ মিশিয়ে দেশের বড় বড় পোল্ট্রি ফার্মে নিয়মিত সরবরাহ করছে।
বর্তমানে সালাউদ্দিনের ছেলে সোহাগ ও ভাতিজা সাদ্দাম এই পোল্ট্রি ফিডের ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
এক সময়ের শ্রমিক সরবরাহকারী মাঝি হিসেবে পরিচিত হাজী সালাউদ্দিনের কারখানাগুলোতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ‘মিটবন’ মিশিয়ে পোল্ট্রি ফিড তৈরি করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০১১ সালের ২১ জুলাই হাইকোর্ট এক মাসের মধ্যে ট্যানারি বর্জ্য থেকে মাছ, মুরগির খাবার তৈরির কারখানা বন্ধের নির্দেশ দিলেও হাজী সালাউদ্দিনের মত অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ট্যানারি বর্জ্য মিশ্রিত পোল্ট্রি ফিড খাওয়া মুরগির ডিম পরীক্ষা করে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে ক্রোমিয়াম ধরা পড়ে। যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
Discussion about this post