চট্টগ্রাম,২৮ মে,২০২৪:
ঘূর্ণিঝড় রিমালের ১০ ও ৯ নম্বর মহা বিপদ সঙ্কেত নামিয়ে ৩ নং স্থানীয় স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত ঘোষণা করলও গতকাল রাত ১২ টার পর থেকে চট্টগ্রামে প্রচণ্ড তাণ্ডব চালাচ্ছে রিমালের স্থল নিম্নচাপ। চট্টগ্রাম সহ উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টির সাথে প্রায় পঞ্চাশ কিমি. বেগে ঝড়ো বাতাস বইছে। চট্টগ্রামে সারারাতের বৃষ্টিতে নগরী নিম্ন এলাকা সহ বেশকিছু এলাকা ডুবে গেছে। নগরের বায়েজিদে এক ব্যক্তি নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে। মানুষ ঘর থেকে বের হওয়া অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর তাদের ১৯ (ঊনিশ) নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কয়রা, খুলনায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় “রিমাল” উত্তর দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপ হিসাবে বর্তমানে যশোর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরো উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশঃ বৃষ্টিপাত ঝড়িয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হবে।
পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ০৩ (তিন) পুনঃ ০৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ (নয়) নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ০৩ (তিন) পুনঃ ০৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে আগামীকাল সকাল (২৮ মে ২০২৪) পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে এবং সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে গতকাল রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরের অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবার কারণে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। ব্যবসাবাণিজ্য ও অফিস আদালতের স্বাভাবিক কাজকর্মে ঘটেছে ছন্দপতন।গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ২০৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
বৃষ্টিতে বহদ্দার হাট, চকবাজার, মুরাদপুর বাকলিয়া, দুই নম্বর গেট, বাদুরতলা, আগ্রাবাদের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে আজ সোমবার সকালে নগরীর নিচু এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় পানি উঠতে শুরু করে। সকালে নগরীর প্রধান প্রধান সড়কসহ অলিগলির রাস্তা ডুবে যায়। মানুষের বাসাবাড়ি ও দোকানেও পানি ঢুকে।
এছাড়া চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন জায়গায় আজ ২৮ নভেম্বর সকাল থেকে একটানা লোডশেডিং শুরু হয়। বহদ্দার হাট এলাকায় দুপুর চারটা পর্যন্ত বিদ্যুতের দেখা মেলেনি। যে কারণে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ব্যবহারের পানির সঙ্কটও দেখা দেয়। আর গরমের মাত্রাও ছিল তীব্র।
অন্যদিকে কোমর থেকে বুক অবধি জলাবদ্ধতার কারণে নগরীর কোনো কোনো সড়কে যান বাহন চলাচলও বাধাগ্রস্ত হয়। এতে চলাচল ও যাতায়াত থমকে পড়ে। জরুরি প্রয়োজনে জলাবদ্ধতার কোমর বা বুক সমান পানি মাড়িয়ে নানা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, সকাল ৯টা ২২ মিনিটে জোয়ার শুরু হয়। ভাটা শুরু হবে বিকেল ৩টা ১৬ মিনিটে। এর মধ্যে নগরী কোমর ও বুক সমান পানিতে নিমজ্জিত ছিল।
তবে বিকাল চারটায় এই রিপোট লেখা পর্যন্ত চট্টগ্রামে রিমালের প্রভাব কাটেনি। বৃষ্টির সাথে ঝড়োহাওয়া এবং আকাশ ভারী ছিল মেঘে।
Discussion about this post