চট্টগ্রাম, ০৩ নভেম্বর, ২০২৪:
জরায়ু মুখ ক্যান্সার নারীদের একটি প্রাণঘাতি রোগ। ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী মেয়েরা জরায়ু ক্যান্সার আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশে প্রতিবছর আট হাজারের বেশি মেয়ে এই রোগে আক্রান্ত হয়। তাদের পাঁচ হাজারের মত নারী জরায়ু ক্যান্সারে মারা যায়। মাতৃমৃত্যু বা মেয়েদের মৃত্যুর হার কমাতে হলে এইচপিভি টিকা নিতে হয়। চট্টগ্রাম বিভাগে এ বছর ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী ১৮ লাখ নারীকে টিকা দানের টার্গেট নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সাত লাখ মেয়েকে টিকা প্রদান করা হয়েছে।
আজ চট্টগ্রামে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৪ এর রিভিউ সভা সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে আয়োজন করা হয়েছে।
এতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূর জাহান বেগম বলেছেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধী হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস- এইচপিভি টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা যাতে পূরণ হয় এজন্য সবাইকে চেষ্টা করতে হবে। ভ্যাক্সিনটা নিয়ে নানা রকম অপপ্রচার আছে। সকল অপপ্রচার রুখে দেওয়ার উপায় হচ্ছে জন সচেতনতা সৃষ্টি। জনসচেতনতার উপর আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। মানুষ যদি সচেতন হয় যে কোনো অপপ্রচার রুখে দেওয়া যাবে।
বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) চট্টগ্রাম বিভাগ, চট্টগ্রাম আয়োজিত
আজ ০৩ নভেম্বর বেলা ১১ টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৪ এর রিভিউ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূর জাহান বেগম এসব কথা বলেন।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ আনোয়ারা পাশার সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা অং সূই প্রু মারমা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডাক্তার চিরঞ্জিত দাশ, ব্রিজেৎ জনসন।
এছাড়া পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, গাইনোকোলজিস্ট সোসাইটি, ইউনিসেফ, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, কওমী মাদ্রাসার প্রতিনিধিরা জরায়ুমুখ ক্যান্সার টিকা দানের বিষয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। এতে ছাত্র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় কয়েকটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনায় জানানো হয়- বাংলাদেশে প্রতি এক লক্ষ নারীর মধ্যে এগার জন জরায়ু মুখ ক্যান্সার আক্রান্ত। এই রোগে প্রতি বছর দেশে ৪৯৭১জন রোগী মারা যায়। অদ্যাবধি শনাক্তকৃত শতাধিক ধরনের ধরনের এইচপিভি ভাইরাসের মধ্যে ১৬ ও ১৮ সেরোটাইপ খুবই মারাত্মক। যা ৭০℅ জরায়ু মুখ ক্যান্সারের জন্য দায়ি।
নির্দিষ্ট বয়সে এইচপিভি টিকা গ্রহণ করলে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। যা বাংলাদেশে এ বছর সাতটি বিভাগে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণীর ছাত্রী সহ ৯ থেকে ১৪ বছর বয়সি ৬২ লাখ নারীকে দেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮ লাখ নারীকে টিকা দেয়ার লক্ষমাত্রায় ইতিমধ্যে ৭ লাখ নারীকে টিকা দেওয়া হয়েছে। সাত বিভাগে লক্ষমাত্রার চল্লিশ শতাংশ অর্জন হয়েছে।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেছেন, বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্যের যে উন্নতি হয়েছে তা জন সচেতনতার কারণে অর্জন হয়েছে। জন সচেতনতা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যতবেশি সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারব ততবেশি আমাদের লক্ষ পূরণ করতে পারব। ডায়রিয়া, কলেরা রোধ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা এভাবে অর্জিত হয়েছে। কুসংস্কার ও অপপ্রচার রোধ করতে হবে।