চট্টগ্রাম, ১৬ মে ২০২৫:
মানত শব্দের সঙ্গে সব ধর্মের অনুসারীরাই কম-বেশি পরিচিত। মানতের বিষয়ে সব ধর্মের অনুসারীরা একমত পোষণ করলেও মানতের ক্ষেত্র নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতভেদ রয়েছে।
এমন মতভেদকে উপেক্ষা করে দেশের অন্যতম মিঠা পানির কার্প জাতীয় মাছের (রুই, কাতাল, মৃগেল ও কালিবাউশ) নিষিক্ত ডিম সংগ্রহের নদী চট্টগ্রামের হালদায় ডিম ছাড়ার জন্য মানত করে নদীতে শিরনি দিয়েছে খলিফাঘোনা এলাকার মোহাম্মদ জাকির হোসেন নামে এক ডিম সংগ্রহকারী।
শুক্রবার এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা গেলে, হালদা নদীর খলিফারঘোনা একজন ডিম সংগ্রহকারী কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে নৌকায় করে একটি বালতি থেকে বড় চামচ দিয়ে ডিম ছাড়ার জন্য দোয়া করে মা-মাছকে শিরনি দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন আজাদী বলেন, নদী অববাহিকার মানুষের সংস্কৃতি, উৎসব, জীবিকা, আনন্দ, বেদনা সব কিছুই যেন হালদা নদীকে ঘিরে। তাই হয়ত বদ্ধমূল ধারণা থেকে হালদা নদীর খলিফাঘোনা এলাকার ডিম সংগ্রহকারী জাকির হোসেন এ কাজটি করেছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা এ মানুষগুলোর জীবিকাকে যেন সহজ করে দেন।
প্রসঙ্গত, প্রজনন মৌসুমের প্রায় এক মাস পার হয়ে গেল। এখনেও হালদা নদীতে নমুনা ডিমও ছাড়েনি মা মাছেরা। এর মধ্যে গত বছরের মতো একের পর এক ড্রেজারের আঘাতে মা-মাছ মরে ভেসে ওঠেছে। যা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, হালদা পারের ডিম সংগ্রহকারী ও হালদা বিশেষজ্ঞদের কাছে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।
মা-মাছকে শিরনি দেওয়ার কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে কিনা জানতে চাইলে হালদা বিশেষজ্ঞ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, এপ্রিল থেকে জুনের শেষ হালদার মা-মাছের প্রজনন মৌসুম। এখনও ডিম ছাড়েনি মা-মাছ। তাই, ডিম ছাড়ার জন্য দোয়া করে হালদা নদীতে শিরনি দিয়েছে একজন ডিম সংগ্রহকারী।