চট্টগ্রাম, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫:
প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীতে মৎস্য হেরিটেজ বাস্তবায়ন তদারকি কমিটির সভা আজ সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, হালদা গেজেট পরিবর্তন করার জন্য আমি উদ্যোগ নিব। ভূজপুরের রাবার ড্যামের ব্যাপারে উদ্যোগ নেব।এ বছর হালদা পাড়ে তামাক চাষ যাতে না হয় সে চেষ্টা করব।
মৎস্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, হালদাকে ডিপিপি ও প্রকল্পের বাইরে চিন্তা করতে হবে। হালদার জন্য আমরা দীর্ঘমেয়াদি কিছু কাজ করব। হালদা নদীর গেজেটে যে দুর্বলতাগুলো রয়ে গেছে এতদিন এগুলো সামনে আনা হয়নি কেন? এটা অনেক আগেই আমার কাছে আসা উচিত ছিল। কিন্তু এটা মন্ত্রণালয় থেকে আমার হাতে আসেনি।
তবে তিনি বলেন, গেজেট পরিবর্তন না করে অনেক কিছু করা যাবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্গত খালগুলো থেকে যে সব বর্জ্য নদীতে পড়ে সেসব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তিনি সিটি কর্পোরেশনকে করার আহ্বান জানান। ‘এক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশনের যদি কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন সেটা আমরা করব। জেলা প্রশাসনও যেন এ কাজে সহযোগিতা করে’ -বলেন তিনি।
তিনি হালদার নাব্যতা ও দূষণের ব্যাপারে বলেন, তামাক চাষ বন্ধে কৃষি অফিসকে হালদা পাড়ের তামাক চাষীদের সবজি বীজ ও সার দিয়ে তাদের তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করতে হবে। এজন্য কৃষকরা কৃষি অফিসে আসবে সে অপেক্ষা না করে কৃষকদের কাছে কৃষি কর্মকর্তাদের যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সভায় ভূজপুরে হালদা নদীর উপর বসানো রাবার ড্যাম সরিয়ে ফেলার সুপারিশ করেন মৎস্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমরা মিটিং থেকে এ প্রস্তাবটা রাখছি ভূজপুর রাবার ডেম একদম সরিয়ে ফেলা হবে। এ ব্যাপারে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলব। এজন্য একটি চিঠি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হবে- যে আমরা সবাই একমত, এটা সরিয়ে ফেলা দরকার।
হালদা দূষণের ব্যাপারে তিনি বলেন, হালদা থেকে দুর্গন্ধ আসছে, কালো পানি আর মরা মাছ ভাসতে দেখেছি। দূষণের ব্যাপারটা- এটা প্রকল্পে নেওয়া হলে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে।
২০১২ সালে ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর ইউনিয়নের আমতলি এলাকায়
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি হালদা নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপন করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আট কোটি টাকা বরাদ্দে। ড্যামটি দৈর্ঘ্যে ১০০ মিটার ও প্রস্থে ৪.৫ মিটার। ওই বছরের মার্চে ড্যামটি চালু করা হয়।
রাবার ড্যামটি স্থাপন করা হয়েছিল ভূজপুর ও নারায়ণহাট ইউনিয়নের ৫০০ হেক্টর বোরো ধানের জমি আবাদের লক্ষ নিয়ে।
ড্যামের নিচের দিকে ১০ কিলোমিটার অংশে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু কিছু অংশে হালদা শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহাম্মদ জিয়াউদ্দীনের সভাপতিত্বে এতে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডাক্তার শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম সহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও হালদা গবেষক ও অন্যান্য অংশীজনরা।







