চট্টগ্রাম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৩:
একদিকে প্রায় ৩৪-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় অতিষ্ট চট্টগ্রামের মানুষ অন্যদিকে গরমে হাঁসফাঁস করছে তারা। নগরীর কোনো কোনো জায়গায় ১ ঘণ্টা পর পর লোডশেডিং হচ্ছে। প্রতিদিন লোডশেডিংয়ের ভয়াবহ মাত্রা। কোনো প্রতিকারও মিলছে না। শহরের চেয়ে গ্রামে লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরও ভয়াবহ। পিডিবি বলছে ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণেই এই লোডশেডিং।
কারণ চট্টগ্রাম অঞ্চলে স্থানীয়ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে। যেখানে চট্টগ্রামে বিদ্যুতের দৈনিক চাহিদা ১ হাজার ৩৫১ মেগাওয়াট। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে দৈনিক বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ৬৪৫ মেগাওয়াট। কিন্তু জাতীয় গ্রিড থেকে ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নিয়েও তারা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না।
বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্যমতে, কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে একটি ইউনিটে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। লেকে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় চারটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। শিকলবাহা গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২২৫ ও ১৫০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিটে উৎপাদন বন্ধ। সেখানে ২২৫ মেগাওয়াট ইউনিটটি কয়েকদিন উৎপাদন বন্ধ রয়েছে জানালেও ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করতে আরও প্রায় দুই মাসের লাগবে। যেটি মেরামত চলছে। এরমধ্যে গত শনিবার হাটহাজারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ট্রান্সফরমারে সৃষ্ট সমস্যায় পুরো চট্টগ্রামে কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। এটি আজ সচল হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) দক্ষিণাঞ্চলের (চট্টগ্রাম জোন) প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ রেজাউল করিম সংবাদ মাধ্রমকে বলেন, হাটহাজারী বিদ্যুৎকেন্দ্রে ক্ষতিগ্রস্ত ট্রান্সফরমারের মেরামত কাজ এখনো শেষ হয়নি। জাতীয়ভাবে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ঘাটতি রয়েছে। কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে টেকনিক্যাল সমস্যায় উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। ফলে লোডশেডিং বেড়ে গেছে।
তথ্যমতে চট্টগ্রামে চালু রয়েছে ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এর মধ্যে খুঁড়িয়ে চলছে ৬টি। অপরদিকে উৎপাদন ক্ষমতার অর্ধেক উৎপাদনে চলছে ৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪২০ মেগাওয়াটের ২টি (প্রতিটি ২১০ মেগাওয়াট করে) বিদ্যুৎ কেন্দ্র দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। হাটহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টটিও অনেক দিন থেকে বন্ধ। ২৪ মেগাওয়াটের রিজেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ রয়েছে। ১০০ মেগাওয়াটের এনার্জি প্যাক বন্ধ। এদিকে বছরের পর বছর ধরে টেকনাফ সোলার প্ল্যান্ট ও কাপ্তাই সোলার প্ল্যান্ট বন্ধ রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
ছবি: ৩ দিন আগে হাটহাজারী বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন লাগার ছবি, যেটি আজ সচল করা হয়েছে।