চট্টগ্রাম, ২৪ জুন, ২০২৩:
রাশিয়ার সামরিক হেলিকপ্টারগুলো শনিবার বিকেলে বিদ্রোহী ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনীর একটি কাফেলার উপর গুলি চালায় যা ইতিমধ্যেই মস্কোর দিকে অর্ধেকেরও বেশি পথ ধরে দক্ষিণের একটি শহর দখল করে মস্কোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। গত শুক্রবার ইউক্রেন সীমান্ত লাগোয়া রোস্তভ-অন-ডন শহরের দখল নিয়েছিল ওয়াগনার বাহিনী। শনিবার ইউক্রেন সীমান্তের অদূরে পশ্চিম রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর ভোরোনেজ় দখল করেছে বলে কয়েকটি পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমের দাবি।
তবে এরমধ্যে রয়টার্সের একজন সাংবাদিক সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারগুলোকে একটি সশস্ত্র ওয়াগনার কলামে গুলি চালাতে দেখেছেন যেটি একটি ফ্ল্যাটবেড ট্রাকে সৈন্য বহনকারী এবং কমপক্ষে একটি ট্যাঙ্ক নিয়ে ভোরোনেজ শহরের পাশ দিয়ে অগ্রসর হচ্ছিল।
প্রিগোজিন, যার প্রাইভেট আর্মি ইউক্রেনের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লড়েছিল এমনকি তিনি কয়েক মাস ধরে শীর্ষস্থানীয় কর্তাদের সাথে শত্রুতা শুরু হয়। কারণ ওয়াগনার প্রধান দাবি করেন রাশিয়ার সেনাবাহিনী তার বাহিনীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। ওয়াগনার গ্রুপ শুক্রবার জানায়, তাদের ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে বিপুল সংখ্যক সদস্যকে হত্যা করেছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী।
এদিকে প্রেসিডেন্ট পুতিন জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেছেন, ‘যারা ইচ্ছাকৃতভাবে বিশ্বাসঘাতকতার পথে পা দিয়েছে, যারা সশস্ত্র বিদ্রোহের জন্য প্রস্তুত, যারা ব্ল্যাকমেইল এবং সন্ত্রাসী পদ্ধতির পথ নিয়েছে, তারা অনিবার্য শাস্তি ভোগ করবে, আইন এবং আমাদের জনগণ উভয়ের কাছেই জবাব দেবে।’
ইতিমধ্যে ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে রাশিয়ার সরকার।
প্রিগোজিন একটি অডিও বার্তায় বলেন, ‘রাষ্ট্রদ্রোহের কথা বলার সময় রাষ্ট্রপতি একটি গভীর ভুল করেছেন। আমরা দেশপ্রেমিক, আমরা এর জন্য লড়াই করেছি এবং লড়াই করছি। আমরা চাই না দেশ দুর্নীতি ও প্রতারণার মধ্যে থাকুক।’
পশ্চিমা দেশগুলো বলেছে, যে তারা পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাশিয়ার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ব্রিফ করা হয়েছে। ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলেছে, “সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ান রাষ্ট্রের কাছে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জের প্রতিনিধিত্ব করে।”
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বার্তায় লিখেছেন, ‘রাশিয়ার দুর্বলতা স্পষ্ট। সম্পূর্ণ দুর্বলতা। এবং রাশিয়া যত বেশি সময় আমাদের ভূমিতে তার সৈন্য এবং ভাড়াটে সৈন্যদের রাখবে, তত বেশি বিশৃঙ্খলা, যন্ত্রণা এবং সমস্যা তার নিজের জন্য হবে।’
প্রিগোজিনের বিদ্রোহ
প্রাক্তন দোষী সাব্যস্ত এবং পুতিনের দীর্ঘদিনের মিত্র প্রিগোজিন একটি প্রাইভেট সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দেন যার মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার কারাগার ছাড়া পাওয়া হাজার হাজার প্রাক্তন বন্দী।
তার লোকেরা ১৬ মাসের ইউক্রেন যুদ্ধের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর যুদ্ধে অংশ নেয়, যার মধ্যে পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাখমুতের জন্য দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধও ছিল।
তিনি কয়েক মাস ধরে নিয়মিত সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন, জেনারেলদের অযোগ্যতা এবং তার যোদ্ধাদের কাছ থেকে গোলাবারুদ আটকে রাখার অভিযোগ তুলেছিলেন। এই মাসে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কমান্ডের অধীনে তার সৈন্যদের রাখার একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার আদেশ অমান্য করেছিলেন।
সেনাবাহিনী একটি বিমান হামলায় তার অনেক যোদ্ধাকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করার পর শুক্রবার তিনি স্পষ্ট বিদ্রোহ শুরু করেন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তা অস্বীকার করেছে।
প্রিগোজিন বলেছেন,আমাদের মধ্যে ২৫০০০ সৈন্য আছে, তারা জীবন দিতে প্রস্তুত। ওয়াগনারের পথ আটকালে তিনি তার উপযুক্ত জবাব দিবেন। রাশিয়ার একটি হেলিকপ্টারকে গুলি করার কথাও জানান।
ওয়াগনারের বিদ্রোহে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট-জেনারেল ভ্লাদিমির আলেকসেয়েভ প্রিগোজিনকে তার কর্ম পুনর্বিবেচনা করার জন্য একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতির সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়োগের অধিকার রয়েছে এবং আপনি তার কর্তৃত্ব দখল করার চেষ্টা করছেন।’ খবর রয়টার্সে
র
Discussion about this post