৮ নভেম্বর, ২০২১, চট্টগ্রাম:
জ্বালানি তেল ও পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ১৮ নভেম্বর অর্ধদিবস হরতালের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ ৯ নভেম্বর এক সমাবেশে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ডা. এমএ সামাদ।
এছাড়া জ্বালানি তেলের বর্ধিত দাম প্রত্যাহারের দাবিতে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তারা জ্বালানি তেলের লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়তি দাম প্রত্যাহার ও খাদ্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ করার আহ্বান জানিয়েছে সরকারের প্রতি। তাদের আহ্বানে সারা না দিলে সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া ও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে।
কমিউনিস্ট পার্টি ডাক্তার এম এ সামাদ বলেন, সরকারের এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ১৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজধানীতে হরতাল পালন করা হবে।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ ৮ নভেম্বর বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত ‘জ্বালানি ও দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে’ এক মানববন্ধনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোকে সরকারের পাতানো ও সাজানো খেলা। সরকার পর পর দুবার পকেট কাটল জনগণের। একবার জ্বালানি তেল ও এলপিজির দাম বাড়িয়ে এবং আরেকবার বাসভাড়া বাড়িয়ে।
মানববন্ধন থেকে দুদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১০ নভেম্বর ঢাকা বাদে দেশের অন্য মহানগরগুলোতে প্রতিবাদ সমাবেশ হবে। ১২ নভেম্বর জেলা সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার তেলের দাম না কমিয়ে উল্টো সড়ক ও নৌপথের ভাড়া বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের স্বার্থবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। সরকার অযৌক্তিকভাবে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়িয়েছে।তেলের দাম ও পরিবহন ব্যয় বাড়ানো গণবিরোধী সিদ্ধান্ত। এতে সাধারণ মানুষ অসহনীয় ভোগান্তির শিকার হবে। তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে পরিবহনসহ জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে কয়েকগুণ।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, করোনাকালে কয়েক কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এমন বাস্তবতায় তেলের দাম বাড়ানো একেবারেই অগ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত।
আজ ৮ নভেম্বর জাসদ( ইনু) নেতৃবৃন্দ বাস লঞ্চের ভাড়া বাড়ানো অযৌক্তিক মন্তব্য করে বলেন, জ্বালানি তেলের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করতে হবে।একই সঙ্গে জোরজুলুম করে অযৌক্তিক ভাড়া আদায় বন্ধ করার জন্য সরকারকে কঠোর অবস্থান নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি দলীয় বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
রাজধানীর পল্টন মোড়ে আজ ৮ নভেম্বর বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও-পূর্ব বিক্ষোভ সমাবেশে নেতারা বলেছেন, জনগণকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে দাবি পূরণে বাধ্য করা হবে।
জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুল আলী, সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন প্রমুখ।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আজ আজ ৮ নভেম্বর গণ অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন দলের নেতারা। আগামীতে দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে সরকার গঠন করার কথা জানিয়ে সমাবেশে গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন,আজকে তেল-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি কেন? কেন নিত্যপ্রয়োজনীয় নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে? কারণ বাজারের উপরে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। যে যার মত লুটেপুটে খাচ্ছে। গণ অধিকার আদায়ে সবাই রাস্তায় নামতে হবে।
সংগঠনের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরু বলেন, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকার কারণেই কোন ধরনের সমন্বয় না করে তেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়েছে। অথচ গত ৭ বছরে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কম থাকলেও সরকার দাম না কমিয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকা লাভ করছে। একটি ন্যায্য ও গ্রহণযোগ্য ভাড়া নির্ধারণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি। রাজধানীর সেগুনবাগিচা শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান। সূত্র: দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, দৈনিক সমকাল, দৈনিক যুগান্তর।
Discussion about this post