চট্টগ্রাম, ২৬ এপ্রিল,২০২৫:
চট্টগ্রাম উত্তর জেলার আওতাধীন উপজেলাসমূহে বিরাজমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে চট্টগ্রাম উত্তর জলা বিএনপি আজ দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার চট্টগ্রাম উত্তর জেলার রাজনৈতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি রাউজানের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি রাউজানের সন্ত্রাস ও খুনোখুনির ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে সঠিকভাবে তুলে ধরা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন। রাউজানের যে ঘটনা প্রবাহ পত্রপত্রিকায় আসছে তা সবকিছু সঠিক নয়। এজন্য সাংবাদিকদের যথেষ্ট অনুসন্ধান করে পত্রিকায় খবর প্রকাশের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের পরে রাউজানে বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড হয়েছে। আমি মনে করি যে হত্যাকাণ্ডগুলি হয়েছে তার সাথে রাজনীতির কোনো সংশ্লিষ্টতা নাই। রাজনৈতিক নেতার দ্বন্দ্বের প্রেক্ষিতে এটা হয়নি। আপনারা যদি তালাশ করেন শুরু থেকে, শুরু হয়েছিল কখন? মূলত রাউজানে ১৯৯৫ সালের পর থেকে কলেজ ছাত্র ফারুক হত্যার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের শুরু হয় রাউজানে। এ পর্যন্ত শতাধিক ছাত্রযুবককে প্রাণ দিতে হয়েছে। সে সময় ছাত্রলীগ এবং অধুনালিপ্ত এনডিপির সন্ত্রাসীরা যুক্ত ছিল এসব কর্মকাণ্ডে। পাঁচ আগস্টের পট পরিবর্তনের পরে সে হত্যাকাণ্ডগুলো আবার শুরু হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ মাটি কাটা, খালের বৈধ-অবৈধ মহাল দখলের দ্বন্দ্ব, চাঁদাবাজি, সরকারের ঠিকাদারি থেকে পার্সেন্টেজ আদায়ের কারণে। সাধারণ ব্যবসায়ীদের তালিকা করে চাঁদা আদায় করা, চাঁদা যদি দেওয়া না হয় তাদের দোকানপাটে হামলা করা, তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া, বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত সন্ত্রাসীরা এ হত্যাযজ্ঞগুলো করে আসছে। বালুর মহাল দখল করে মাটি কাটা, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন উপায়ে টাকা উপার্জন করে ওই টাকা দিয়ে তারা অস্ত্র কিনছে। এ পর্যন্ত অনেক অস্ত্রশস্ত্র কেনা হয়েছে। এটা হয়ত অনেকেই জানেন না। সুতরাং সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডকে আড়াল করার জন্য রাজনীতির ছত্রছায়া ব্যবহার করছে। এসব ঘটনার সাথে বিএনপির রাজনীতির সম্পর্ক নেই। রাউজানের বিএনপির দুই রাজনৈতিক নেতার দ্বন্দ্বের কারণেও নয়। এসব অপকর্মে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়। বিএনপি বা অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মি কেউ জড়িত থাকলে সেটা যথেষ্ট অনুসন্ধানের মাধ্যমে সংবাদ পরিবেশন করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদি আওয়ামী লীগ সরকারের যে সব সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজরা আগে তাদের দলে থেকে রাউজানে অরাজকতা সৃষ্টি করেছিল তারা এখন বিএনপির নাম ব্যবহার করে খুন, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি, মাটি ও বালির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ চাঁদার ভাগ কারা পাচ্ছে, কোথায় জমা হচ্ছে তা সঠিকভাবে খবর নিলে জানা যাবে প্রকৃত ঘটনা। তিনি বলেন,
এসবের সঠিক তথ্য সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও আছে।
রাউজানের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিনি যৌথবাহিনী, র্যাব কিংবা সেনাবাহিনীর অভিযান পরিচলনা করে অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের আহ্বান জানান।
একই সাথে চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বৈধ-অবৈধ বালি ব্যবসা কয়েক মাসের জন্য বন্ধ রাখার পরামর্শ দেন সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম. এ. হালিম, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী, বেলায়েত হোসেন, নুর মোহাম্মদ সহ উত্তর জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
Discussion about this post