চট্টগ্রাম, ১ জুন, ২০২২:
খাদ্যপণ্য নিয়ে সবকিছুর হু হু করে দাম বাড়ার মধ্যে চাল নিয়ে বাড়ছে চালাচালি। একে তো দাম বাড়ছে। তার মধ্যে চাল মজুতদারির খবরও আসছে। অন্যদিকে বাজার থেকে চাল কিনে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো প্যাকেটজাত করে বিক্রি করছে। সরকার এ ব্যাপারে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করেছে।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানিয়েছেন, খোলা বাজার থেকে চাল কিনে তা প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা যাবে না। যদি নিজস্ব মিল থাকে তারা সেখানে প্যাকেট করতে পারবে। কিন্তু বাজার থেকে চাল সংগ্রহ করে প্যাকেট করতে দেব না। এটা বিভিন্ন জায়গায় আমাদের ম্যাসেজটা, যেখানে তারা প্যাকেট করে সেখানে দেয়া হয়েছে। এরা ছাড়া তো কেউ প্যাকেট করে না। খুচরা কিনে তারা প্যাকেট করতে পারবে না। মিল মালিকরা নিজস্ব প্রডাকশন বিক্রি করতে পারবে।
চালের মূল্য বৃদ্ধির জন্যস্কয়ার, প্রাণ, সিটি, আকিজ, এসিআই, বসুন্ধরাকে দায়ি করেন খাদ্যমন্ত্রী।
আজ বুধবার, ১ জুন সচিবালয়ে সাংবাদিকদেও প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। এদিকে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার চাল মজুতদারির বিরুদ্ধে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।
আজ বুধবার রাজধানীতে চালের বাজারে অভিযান চালিয়ে ৩ লাখ বিশ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৭ লাখ ২৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রাজধানীর কাওরান বাজার, মিরপুর সহ বিভিন্ন স্থানে
ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স ও চালের মজুত পরিস্থিতি যাচাই করতে গিয়ে অভিযান চালায়। এতে চালের বিক্রেতারা দোকান বন্ধ রেখে পালিয়েও যায়। অন্যদিকে চালেল মজুত আর ক্রয়ের কাগজপত্রে মিল না থাকায়ও অভিযান চালানো হয়। এছাড়া অতিরিক্ত দামে বিক্রি ও মূল্যতালিকায় গড়মিলের জন্যও শাস্তি দেওয়া হয়।
এছাড়া দিনাজপুর, নাটোর, কুস্টিয়া, বগুড়া, চট্টগ্রাম, সিলেটে, কুড়িগ্রাম, বরিশাল হিলি সহ বিভিন্ন স্থানে সরকারের সংশ্লিষ্টরা অভিযান পরিচালনা করেন। গুদামে অতিরিক্ত ও অবৈধভাবে মজুত রাখা, চালের দাম বেশি রাখা সহ নিয়মনীতি লঙ্ঘনের জন্য অভিযান চালানো হয়। এরমধ্যে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর গুদামেও অভিযান চালানো হয়।
এর আগে গত সোমবার মন্ত্রী সভার বৈঠকে ভরা মৌসুমেও বাজারে চালের দামের ঊর্ধ্বগি তে প্রশ্ন তোলা হয়। বৈঠকে
কেউ চাল মজুদ করে বাজার অস্থির করছে কি না, তা খতিয়ে দেখে দ্রুত নেওয়ার কথা বলেন
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকটি হয়েছিল।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, যদি কেউ এভাবে (নিয়ম-নীতি ভেঙে) আনঅথরাইজড চালের ব্যবসা করে বা মজুদ করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আজকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে আলোচসূচির বাইরে এ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল সেদিন। কেন ভরা মৌসুমে চালের দাম বেশি সেটা নিয়ে আলোচনা হয়।
এর আগে গত ২৯ মে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে ‘বোরো ২০২২ মৌসুমে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ ও বাজার মনিটরিং সংক্রান্ত অনলাইন মতবিনিময় সভায়’ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, অধিকাংশ ব্যবসায়ী বোরো ধান কিনে মজুদ করছেন আর বাজারে ছাড়া হচ্ছে আগের মৌসুমের চাল। ছবি: সংগৃহীত
Discussion about this post