চট্টগ্রাম, ৩ জুন, ২০২২:
তালের ডাবে ভরা চট্টগ্রামের ফলের বাজার। চট্টগ্রামের স্টেশন রোডের বিভিন্ন পাইকারি ফলের দোকানে দেশের বিভিন্ন জায়গা তালের ডাব আনা হচ্ছে। স্টেশন রোডের সড়কের দুপাশে স্তুপ স্তুপ করে রাখা হয়েছে তালের ডাব। আর তালের ডাব কিনে খুচরো বিক্রেতারা নগরজুড়ে ভোক্তাদের কাছে ছড়িয়ে দিচ্ছে। ডাবের শাঁস কিনে খাচ্ছে ছেলে বুড়ো সবাই।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাকে ট্রাকে আসছে তালের ডাব। , যশোর, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালি সহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসছে এসব তাল। এছাড়া স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত তালও আছে। শহর এলাকা ছাড়িয়ে তালের শাঁস বিক্রি হচ্ছে গ্রামের হাটে বাজারে। তবে চট্টগ্রামের বাইর থেকে আসা তালের ডাবই বাজার চাঙ্গা। রয়েছে ভোক্তাদের চাহিদা।
নগরীর বহদ্দার হাটের কাঁচা তালের ডাবের বিক্রেতা আবদু জলিল বলেন, তালের অভাব নেই। কিন্তু যে পরিমাণ তাল এসেছে সে পরিমাণ ক্রেতা নেই। ফল হিসাবে কাঁচা তালের কদর খুব বেশি নেই। এমনি কেউ খেয়ালের বশে কিনে খায়। কমলা, আপেল, আঙ্গুর বা অন্যান্য ফলের তুলনায় এটার সেরকম চাহিদা নেই। বিশেষ করে শিশু-কিশোররা এসব তাল শাঁস পছন্দ করে বেশি।
তিনি বলেন, তালের ডাব বিক্রি করাও ঝামেলা আছে। সাথে কাটাকুটির হাতিয়ার রাখতে হয়। মানুষ নিজেরা এত কষ্ট করে তালের ডাব কেটে খেতে পারে না। এজন্য তালের ডাব কেটে দিয়ে বিক্রি করতে হয়। এতে পরিশ্রম আর ক্রয়-বিক্রয়মূল্য হিসাব করলে তালের ডাবের ব্যবসায় বেশি লাভ নেই। কিন্তু আমাদের কম পুঁজিতে এটা ছাড়া আর অন্য কোনো উপায়ও নেই।
তালের ডাব খাওয়া একটু ঝামেলার বটে। কিন্তু প্রতি বছর বছর এই ফলের চাহিদা বাড়ছে। কারণ শহরের অলিগলিতে মিলছে তালের ডাব।
তালের ডাবের প্রতি এখনো আপেল, আম, জাম, কমলার মত চাহিদা তৈরি না হলেও তালের ডাব পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ।
স্বাদে মিষ্টি তালের ডাব। কচি তালের শাঁস নরম, তুলতুলে। আর একটু বয়স হলে তালের শাঁসও শক্ত হয়ে যায়। তবে ছোট ডাব কাটলে নরম তুলতুলে শাঁস বেশি খেতে পছন্দ করে মানুষ। তবে পুষ্টিগুণের মধ্যে প্রতি ১০০ গ্রাম তালের ডাবের শাঁসে রয়েছে- জলীয় অংশ ৮৭ দশমিক ছয় গ্রাম, আয়রন এক মিলিগ্রাম, থায়ামিন শূন্য দশমিক চার গ্রাম, রিবোফাভিন শূন্য দশমিক দুই মিলিগ্রাম, নিয়াসিন শূন্য দশমিক তিন মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭ মিলিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১০ দশমিক নয় গ্রাম, আমিষ শূন্য দশমিক আট গ্রাম, ভিটামিন সি মিলিগ্রাম ফ্যাট শূন্য দশমিক পাঁচ গ্রাম, খাদ্য আঁশ এক গ্রাম, ফসফরাস ৩০ মিলিগ্রাম। যা শরীরের পুষ্টির যোগান দেয়। স্বাস্থ্য গঠন করে। আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
অন্যদিকে কয়েক মাস পর পেকে উঠবে এসব তালের ডাব। তখন তালের রসের পিঠাপুলির ঘ্রাণ ঘরের দেয়াল ছেড়ে পৌঁছে যাবে প্রতিবেশির ঘরেও। এজন্য অপেক্ষা করতে হয় ভাদ্র, আশি^ন মাস পর্যন্ত।
Discussion about this post