চট্টগ্রাম, ১১ জুলাই, ২০২২:
চট্টগ্রামে ঈদুল আযহায় জবাই করা পশুর চামড়া সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে এ বছর সন্তুষ্ট কাঁচা চামড়ার ব্যবসায়ীরা। তাদের চামড়া সংগ্রহ কাজ এখনো চলছে । ইতিমধ্যে চট্টগ্রামে প্রায় দুই লাখ পিস চামড়া সংগ্রহ করেছে চট্টগ্রামের চামড়া আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম চামড়া ব্যবসায়ী আড়তদার সমবায় সমিতির সহ-সভাপতি আবদুল কাদের বলেন, চট্টগ্রামের আড়তদাররা প্রায় পৌনে দুইলাখ গরু, ছাগল ও অন্যান্য কোরবানি পশুর চামড়া সংগ্রহ করেছেন। পশুর চামড়া সংগ্রহের কাজ সুষ্ঠুভাবে চলছে। লবণের পর্যাপ্ত মজুদ থাকা ও ৭/৮ ঘণ্টার মধ্যে সব চামড়া সংরক্ষণ করা গেছে। এখন এসব চামড়া সংগ্রহের কাজ চলছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গতকাল পশু জবাইয়ের পর থেকে চামড়া সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। ঠিক সময়ে লবণ দিয়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করায় নষ্ট হয়নি কোনো চামড়া। গরু, ছাগল, মহিষ মিলিয়ে চট্টগ্রামে প্রায় চার লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
জানা গেছে, গাউছিয়া কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে কোরবানির কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করেছেন। করেছেন। তারা এক লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষে ইতিমধ্যে ৫০ হাজার পিস চামড়া সংগ্রহ করেছেন। সংগঠনের ৭০০ ইউনিটের মাধ্যমে ৬ হাজার কর্মী ৮০টি গাড়ি নিয়ে চামড়া সংগ্রহে নেমেছে গতকাল রবিবার থেকে।
ব্যবসায়ীরা জানান, তাদেরও লক্ষ অনুযায়ী চামড়া সংগ্রহ হবে। চট্টগ্রামের জেলা-উপজেলাজুড়ে তাদের নিজস্ব চামড়া সংগ্রহকারী আছে। তারা যে চামড়া সংগ্রহ করেছে সেগুলো নিয়ে আসলে তারা কাঙ্ক্ষিত চামড়া পেয়ে যাবেন।
ব্যবসায়িরা জানান, চট্টগ্রামে কোরবানি থেকে তিনদিন ব্যাপী বিচ্ছিন্নভাবে পশু জবাই করা হয়। যে কারণে নতুন চামড়াও আসবে।
চামড়া ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলমগীর জানান, চট্টগ্রামে কোরবানির চামড়া সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণের সুষ্ঠুভাবে চলছে। লবণ দেয়া সহ অন্য প্রক্রিয়াগুলো ঠিকঠাকমত হওয়ায় এ বছর কোরবানির চামড়া সংগ্রহে কোনো বেগ পেতে হয়নি আমাদের।
চট্টগ্রামে মূলত আতুরার ডিপু, হামজার বাগ এবং আগ্রাবাদের চৌমুহনী এলাকার আড়তদাররা চামড়া সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে চামড়া সংগ্রহ করে। যেখানে তারা এখনো চামড়া সংগ্রহে ব্যস্ত আছেন।
তবে চট্টগ্রামের সব চামড়া সংগ্রহ হওয়ার পর আড়তদাররা বলতে পারবেন কত চামড়া সংগৃহীত হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের টার্গেট চারলাখ পিস হলে চট্টগ্রামে প্রায় আট লাখ পশু জবাই হয়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম প্রাণী অধিদপ্তর সূত্র। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে সঠিকভাবে চামড়া সংরক্ষণের জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে। এজন্য একটা চামড়াও নষ্ট হয়নি। সরকারের এই কার্যক্রমে ব্যবসায়ীরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
কাঁচা চামড়ার ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সরকারের প্রচারণার কারণে ট্যানারি মালিকরা মানসম্মত চামড়া আমাদের কাছ থেকে পাবেন।
তবে ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, ট্যানারি মালিকরা যেন সরকার নির্ধারিত মূল্যেই চামড়াগুলো ক্রয় করেন। তাহলে তাদের কষ্ট সার্থক হবে।
উল্লেখ্য, লবণযুক্ত চামড়া প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৪ টাকা, খাসির চামড়া ১৮ থেকে ২০ টাকা, বকরির চামড়ার দর ১২ থেকে ১৪ টাকায় ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রির জন্য দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার।
এদিকে চট্টগ্রাম নগরের চামড়ার আড়ত এলাকায় কোরবানির পশুর বর্জ্য ও চামড়া বজর্্য সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় ঠিকমত পরিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
Discussion about this post