চট্টগ্রাম, ২৪ জুলাই, ২০২২:
মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হতেই সাগরে পাড়ি দিচ্ছেন জেলেরা। গত শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে উপকূলীয় জেলেদের সাগরযাত্রা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর বৃহত্তম পাইকারি মৎস্য আড়ত চট্টগ্রামে ফিশারিঘাট, মাঝিরঘাট, চাকতাই, ফিরিঙ্গিবাজার, কাট্টলী এবং জেলার সীতাকু-, আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপকূল থেকে শত শত ফিশিং ট্রলার শনিবার মধ্যরাত থেকেই মৎস্য আহরণে গভীর সমুদ্রের পানে ছুটেছে। গতকাল রবিবার সকালের পালায়ও এসব এলাকার বিভিন্ন ঘাট থেকে জেলেদের অনেকে ফিশিং ট্রলার নিয়ে গভীর সাগরে যাওয়ার কথা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার শেষ পর্যায়ে গত কয়েকদিন ধরে চলে ট্রলারে ভোগ্যপণ্য ও বরফ মজুদের কাজ। বোঝাই করা হয়েছে জরুরি নিরাপত্তা সরঞ্জামও। টানা দু’মাসেরও বেশি দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞার অলস সময়ে জাল ও ট্রলারের মেরামত কাজ সম্পন্ন করে রেখেছিলেন জেলেরা।
কমবেশি এক মাসের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে তারা সাগরযাত্রা করছেন। যদি জালে বেশি মাছ উঠে তাহলে ১০ থেকে ১৫ দিন পর একবার ঘাটে ফিরতে পারেন। লম্বা সময় সাগরে জাল না পড়ায় এই সময়ে ইলিশ অনেক বড় হয়েছে। এখন বৃষ্টিও হচ্ছে। তাই প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে বলেই তাদের আশা।
ইতিমধ্যে বড় আকারের মাছ ধরা পড়ছে কক্সবাজার ও বরগুনাতে, মিলছে প্রচুর ইলিশও। তবে চট্টগ্রামের জেলেরা ‘জো’র অপেক্ষায় আছেন। চট্টগ্রামের জেলেরা আশা করছেন, ‘জো’ শুরু হলে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে।
মহানগর মৎস্য আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শামসুল ইসলাম বলেন, এবার হালকা বৃষ্টিপাতের সাথে আবহাওয়া অনুকূল রয়েছে। এই সময় ইলিশের আকার অনেক বড় হয়। চাঁদপুরের দিকে জেলেদের জালে বড় ইলিশ ধরা পড়ার খবর আসছে। মনে হচ্ছে, এবার বড় আকারের মাছ মিলবে। মাছের পরিমাণও তুলনামূলক বেশি হতে পারে।
গতবছরও নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে জেলেরা নিরাশ হয়ে ফিরেছিলেন। উপকূলের ৫০ হাজার মৎস্যজীবী মাছ ধরার জন্য সাগরে পাড়ি দিলেও তখন খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল কাউকে কাউকে। তবে শেষ সময়ে এসে পূর্ণিমার জো’তে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ে জেলেদের জালে।
পতেঙ্গার মাছ ব্যবসায়ী নুরুল আবছার বলেন, নিষেধাজ্ঞার পর সবাই সাগরে ফিরেছে। অল্প পরিমাণে মাছ ধরা পড়ছে। তবে মাছের সাইজ কিছুটা বড়। কক্সবাজার, বরগুনা এসব জায়গায় বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে বলে শুনেছি। আমাদের এখানেও আশা করছি মাছ ধরা পড়বে।
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বলেন, প্রতি অমাবস্যা ও পূর্ণিমার ‘জো’ এর সময় সাগরে জেলেদের জালে বেশি মাছ ধরা পড়ে।