ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা নয় জন রোহিঙ্গাকে বৃহস্পতিবার, ৯ সেপ্টেম্বর আটক করেছে পুলিশ। সকালে মিরসরাই উপজেলার সাহেরখালী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তাদের আটক করে পুলিশ। মিরসরাই থানার ওসি (অপারেশন) দীনেশ চন্দ্র দাশের বরাতে গণমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয়রা রোহিঙ্গাদের আটক করে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। আটক রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৩ জন শিশু, ৪ জন নারী ও ২ জন পুরুষ রয়েছে। তারা ইঞ্জিন নৌকার সাহায্যে ভাসানচর থেকে মিরসরাই এসে নামে। এরপর স্থানীয়রা রোহিঙ্গাদের চিনতে পেরে আটক করে।
পুলিশের বক্তব্য কয়েকদিন পর পর এ রকম ঘটনা ঘটছে। এর আগেও গত বুধবার সলিমপুর থেকে ১৯ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছিল। যাদের মধ্যে ছিল ৮ পুরুষ, চার নারী, ৭ জন শিশু। এছাড়া চট্টগ্রাম ছাড়াও নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আটক করা হয়েছিল।
কিন্তু রোহিঙ্গারা ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসছে কেন? পুলিশ বৃহস্পতিবারের ঘটনায় পুলিশ বলছে -তাদের পালিয়ে আসার জন্য কেউ সহযোগিতা করছে। অন্যদিকে পালিয়ে তারা টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলেও জানা গেছে।
গত বছর ডিসেম্বর থেকে টেকনাফ থেকে ভাসানচরে প্রায় ১৮ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়। এরপর সরকারি সহযোগিতার পাশাপাশি সরকার ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের জীবিকা নির্বাহের জন্যও ব্যবস্থা করে। তবে ভাসানচরে রোহিঙ্গারা কক্সবাজার ক্যাম্পের মত সুযোগসুবিধা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করছে।
এছাড়া পুরোপুরি আত্মীয় স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে তারা, এমনকি কেউ কেউ পরিবার পরিজনদের ফেলেও এসেছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের সমস্যা। তবে দেশে ইয়াবা ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের যে তৎপরতা তার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি। যে কারণে পুরনো জায়গা বদলে যাওয়ার কারণেও তাদের ব্যবসা ভাটা পড়তে পারে। এ কারণে তারা আগের জায়গায় ফিরে যাওয়ার জন্য সচেষ্ট হতে পারে। বিশেষ করে ইয়াবা ব্যবসার কারণে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে যে টাকার প্রবাহ সেটা ভাসানচরে না থাকায় তাদের আর্থিক সঙ্গতি হ্রাস পেয়েছে। – এমনটাও মনে করছে অনেকে।
অথচ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের জীবিকা নির্বাহকে আরও সহজ করতে চলতি বছরের জুলাই মাসে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের ১০০ টি সেলাই মেশিন, মুদি দোকানের জন্য ১০০ জনকে প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী, ৮০০ জাল, ৫০টি রিকশা ভ্যান, জুতা সেলাইয়ের ২৮ সেট সরঞ্জাম, রিকশা ভ্যান মেরামতের জন্য ২৫ সেট সরঞ্জাম, চুল কাটার ৫০ সেট সরঞ্জাম, পাঁচ+পাঁচ= ১০ হাজার হাঁস, মুরগি, ৭ সেট ইলেট্রিক্যাল সরঞ্জাম, ২০০ জনকে মাছের পোনা, ১০০ জনকে দেশি ছাগল, ৫০ সেট কাঠমিস্ত্রির সরঞ্জাম উপহার হিসাবে প্রদান করেন। ২৮০০ রোহিঙ্গা এসব সামগ্রী পেয়েছে।