চট্টগ্রাম, ১৭ অেব্রুয়ারি, ২০২৩:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থীরা মূল ক্যাম্পাসে যাওয়ার দাবিতে ১০৮ দিন ধরে লাগাতর আন্দোলন করছেন। কিন্তু তাদের দাবি পূরণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কার্যকর কোনো সাড়া পাচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের। যে কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা ২২ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ তারা মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবিতে চোখে কালো কাপড় বেঁধে আন্দোলন শুরু করেন। গত বৃহস্পতিবার সাড়ে ১১টা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইন্সটিটিউটের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে ১০৭ তম দিনের মতো আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন তাদের দাবিকে সবাই যৌক্তিক বললেও ১০৭ দিন আন্দোলন করার পরও কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তপক্ষের কাছ থেকে পাচ্ছে না। মূলত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীদের চারুকলা ইন্সটিটিউটটি চট্টগ্রাম শহরে। তারাও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষার্থীদের মত মূল ক্যাম্পাসে থেকে পড়ালেখা করতে চায়। এই দাবিতে তাদের আন্দোলন চললেও আজ পর্যন্ত তা সুরাহা হয়নি। আসছে না কোনো সিদ্ধান্ত
তাই সর্বশেষ চোখে কালো কাপড় বেঁধে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয় তারা।
এ বিষয়ে চারুকলা ইন্সটিটিউটের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. শহীদ হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আমাদের ইন্সটিটিউটের প্রশাসন সবাই বলছেন- আমাদের দাবি যৌক্তিক। অথচ এই দাবির প্রেক্ষিতে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আমরা এখনো কোনো আশার আলো দেখতে পাইনি।
দেশে অর্থনৈতিক মন্দার কারণ দেখিয়ে এখন চারুকলা ইন্সটিটিউট মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করা যাচ্ছে না বলে কর্তৃপক্ষ বলেছেন।
তিনি বলেন, চবি কর্তৃপক্ষ বলছে, বিশাল অবকাঠামোর প্রয়োজন কিন্তু তাদের রয়েছে বাজেট স্বল্পতা। কিন্তু আমরা তো এখনই বিশাল অবকাঠামো চাচ্ছি না। আমরা চাই আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া হোক, চারুকলা ইন্সটিটিউট মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। ধীরে ধীরে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হোক। নতুন পুরাতন কোনো এক কলাভবনে আপাতত আমাদের ক্লাস করার ব্যবস্থা করা হোক।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রশাসন তাদেরকে ধৈর্য ধরে অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে বো হয়েছে। চারুকলা ইন্সটিটিউটে কাজ চলছে, সব সমস্যার সমাধান করা হবে।
প্রশাসন তাদের দাবি নাকচ করেনি জানিয়ে তিনি বলেন, দাবি বিবেচনায় আছে। সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখানে শুধু অবকাঠামোর বিষয় না, অনেকগুলো প্রক্রিয়া আছে। সবার আগে যেটা প্রয়োজন তা হল চারুকলা ইন্সটিটিউটের একাডেমিক বোর্ডের সবার সম্মতিপত্র। কিন্তু ইন্সটিটিউটের সব শিক্ষকই শহরে থাকতে চান।
মূল ক্যাম্পাসে ফেরাসহ ২২ দফা দাবিতে ২০২২ সালের ২ নভেম্বর আন্দোলন শুরু করেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। ৮২ দিন আন্দোলনের পর ২৩ জানুয়ারি ক্লাসে ফিরেন তারা। ৭ দিনের আল্টিমেটাম শেষে ৩১ জানুয়ারি থেকে ফের আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। গত ৯ ফেব্রুয়ারি চারুকলা আন্দোলনের শততম দিনের আন্দোলনে ছাত্রলীগ হামলা চালায় বলে চারুকলা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।
Discussion about this post