চট্টগ্রাম, ১১ অক্টোবর, ২০২৩:
আগামী ১২ নভেম্বর উদ্বোধন করা হবে দোহাজারী-কক্সবাজার রেল প্রকল্প। এরমধ্যে কর্ণফুলি নদীর কালুরঘাট সেতুর মেরামত কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। কিন্তু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে মেয়াদ উত্তীর্ণ কালুরঘাট সেতু মেরামত করে নিরাপদে ট্রেন চালানো সম্ভব হবে কিনা।
জানা গেছে, কম সময়ের মধ্যে পুরোপুরি সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। যে কারণে প্রথম পর্যায়ের সংস্কার কাজ শেষে ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সর্বশেষ কালুরঘাট সেতুর মেরামতকাজ পরিদর্শনে এসে রেলপথ সচিবসহ রেলওয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে সেতুটি আপাতত ট্রেন চলাচলের উপযোগী করতে নির্দেশনা দিয়েছে। যে কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অক্টোবরের শেষ নাগাদ সেতুর ওপরের অংশ ট্রেন চলাচলের উপযোগি করতে দ্রুত কাজ করছে। এজন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স প্রতিদিন ২০০ শ্রমিক ও প্রকৌশলীকে দিয়ে ওভারটাইমের মাধ্যমে সংস্কারকাজ চালিয়ে নিচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একদল শিক্ষককে পরামর্শক নিয়োগ করে রেলওয়ে কালুরঘাট সেতু মেরামতের উদ্যোগ নেয়। এজন্য তারা ৬০ কোটি টাকা প্রকল্পের ব্যয় বাবত খরচের প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাব অনুযায়ী দরপত্রে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডকে সেতুটি মেরামতের দায়িত্ব দেওয়া হয়।প্রথম পর্যায়ে তিন মাসের মধ্যে সেতুটি ট্রেন চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার চুক্তি ছিল।
কিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ নদীর অভ্যন্তরে সেতুর ১৯টি স্প্যানের নিচের মাটি সরে যাওয়ায় ভারী ট্রেন চলাচলে ঝুঁকির মাত্রা বেড়ে যায়। কারণ শুরুতে ২০-২৫ হাজার জিও ব্যাগ ফেলার কথা থাকলেও বর্তমানে অন্তত ৬০ হাজার ব্যাগ বালি দিতে হবে বলে জানিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে মেরামতের সময়ও বাড়াতে হচ্ছে।
এদিকে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ট্রায়াল রানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। সেখানেও প্রায় শতবর্ষী ও মেয়াদোত্তীর্ণ সেতুর ১৯টি স্প্যানের নিচের মাটি সরে যাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলতে হবে। আগে যেখানে প্রতিটি স্প্যানের ২০-২৫ হাজার জিও ব্যাগ ফেলার কথা থাকলেও বর্তমানে অন্তত ৬০ হাজার ব্যাগ বালি। এতে সেতু মরামতের ব্যয়ও বৃদ্ধি পাবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। তাই কালুরঘাট সেতু মেরামত করে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করতে আমরা কাজ করছি। চলতি মাসের মধ্যেই সেতুটি অন্তত ট্রেন চলাচলের উপযোগী করে রেলওয়েকে বুঝিয়ে দেয়া হবে। তবে মূল মেরামতকাজ শেষ করতে আরো সময় লাগবে।
গত রোববার নিজ দফতরে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ উদ্বোধন হবে ১২ নভেম্বর। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে এ পথে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন।দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে পর্যটন নগরী কক্সবাজার রেলের যোগাযোগে যুক্ত হবে।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, শুধু উদ্বোধনের দিনই ট্রেন চলবে। কাজ শেষ হলে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে পুরোদমে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ১২ নভেম্বর উদ্বোধনের আগেই কালুরঘাট সেতুর কাজ শেষ হবে। আপাতত কালুরঘাট সেতু দিয়ে শুধু ট্রেন চালাতে পারব। অন্যান্য যানবাহন চলাচলের জন্য আরও সময় অপেক্ষা করতে হবে।