চট্টগ্রাম, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪:
মানকচুল আনুষ্ঠানিক চাষাবাদ না হলেও গ্রামের ঘরগেরস্থালীর চারপাশে এক সময় অযত্নে বড় হত মানকচু। কিন্তু মানকচু এখন প্রায়ই দেখা যায় না ঘরগেরস্থালির আশেপাশে। তবে চট্টগ্রামের চন্দনাইশের বরুমতি মেলায় মেলার শুরু থেকে মানকচু বিক্রি করা একটি ঐতিহ্য। এ বছরও এই মেলায় প্রচুর মানকচু এসেছে।
চন্দনাইশ পৌরসভার দক্ষিণ গাছবাড়িয়া বরুমতি খালের পাড়ে শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী বরুমতি মেলা। বরুমতি খালে স্নান শেষে মেলায় কেনাকাটা আগত দর্শনার্থীরা।এক পর্যায়ে মানুষের ঢল নামে। প্রতি বছরের মত গতকাল ১৬ ফেব্রুয়ারি ফাল্গুনের ১ম তিথিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ ভোর থেকে বরুমতি খালের জলে স্নান করে করে পুণ্য অর্জনের আশা প্রকাশ করেন। কথিত মতে, বিয়ের পূর্বে মেয়েদেরকে সংসার জীবনে সুখী হওয়ার মানসে মানত করা হতো বরুমতি স্নান। সে আদিকালের প্রবাদ বাক্য- “জলে ধুয়ে পূত করো কর্মফল”- সেই বাক্যকে হৃদয়ে ধারণ করে প্রতিবছর বরুমতি খালে এই দিনে কাকডাকা ভোর থেকে স্নান করতে আসে দূর-দূরান্ত থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ। সকাল থেকে খালের পাড়ে বসে মেলা। এ মেলার ঐতিহ্য হলো মানকচু বিক্রির হিড়িক। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্রেতারা মানকচু এনে চড়াদামে বিক্রি করে থাকে। এ বছর ৪’শ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে এক ১টি মানকচু।
মানকচু পুষ্টি ও ঔষধি গুণ বিশিষ্ট ফসল। যা এন্টি-ফাঙ্গাল, এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল, এন্টি-রিওমাটিজম, ক্যান্সার প্রতিরোধী, এন্টি-ইনফ্লামেটরি । পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মানকচুতে ভিটামিন এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম এবং এন্টি অক্সিডেন্টগুণ সম্পন্ন।
প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবিলায় খাদ্য সুরক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচন, পরিবেশ রক্ষা ও জনগণকে পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহে এই কচুর চাষ বেশ ফলদায়ক। যা খাদ্য পুষ্টির পাশাপাশি ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তাও দিতে পারে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা, দুর্ভিক্ষ, খরা, লবণাক্ততা, দারিদ্র্য বিমোচনে সহজে মানকচু চাষ করা যায়।