চট্টগ্রাম, ৭ জানুয়ারি, ২০২৩:
শীতে কাঁপছে গোটা দেশ। গত কয়েক দিন থেকে ২৪ ঘণ্টাই কুয়াশার চাদরে ঢাকা চট্টগ্রামের আকাশ। মাঝে মাঝে সূর্য উঁকি দিলেও শীতে জবুথবু চারপাশ। শীতে জড়সর মানুষ ঘরে-বাউরে গরম কাপড় চাপিয়ে কাজকর্ম- অফিস, আদালত, ব্যবসাপাতি সামাল দিচ্ছে।
শীতের এমন ছোবল নিকট অতীতে আর দেখা যায়নি। যেন এক অচেনা রূপ। পৌষের শেষভাগে এমন দাপুটে শীতে কাবু মানুষ সহ অন্য সকল প্রাণিকূল। চট্টগ্রামে কয়েক ডিগ্রি তাপমাত্রা কমেছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।
আবহাওয়া তথ্যমতে,দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৫ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ। রাজধানী ঢাকাসহ মধ্যাঞ্চলে বাড়তে পারে তাপমাত্রা
চুয়াডাঙ্গায় আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের কয়েকটি জেলার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
চট্টগ্রামেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে অন্তত চার ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েকদিনে তা আরও দুয়েক ডিগ্রি কমতে পারে বলে জানিয়েছে দপ্তর। তবে চট্টগ্রামের উপর দিয়ে আপাতত শৈত্য প্রবাহের সম্ভাবনা নেই।
আজ, ৭ জানুয়ারি সকাল ৯ টা থেকে ২৪ ঘণ্টার আবহওয়া তথ্যে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আংশিক মেঘলা আকাশ সহ সারা দেশে আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সর্বত্র ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। মাঝারি অথবা তীব্র শীত অনুভূত হবে। চট্টগ্রামে সর্বনি¤œ কাপমাত্র ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনি¤œ রাজশাহীতে- ৯ দশমিক এক ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন চুয়াডাঙ্গায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চট্টগ্রামে সার্বিক তাপমাত্রা অন্তত চার ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে। এতে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। মধ্যরাত থেকে সকালবেলা পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা থাকছে। এতে করে প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনপদে শীতের কারণে কাবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। বেশি বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের লোকজন। চট্টগ্রাম অঞ্চলে বর্তমানে সর্মনি¤œ তাপমাত্রা ১৪ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে উঠানামা করলেও আগামী দু-তিন দিনে তাপমাত্রা আরও অন্তত দুই ডিগ্রি কমতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বিদায়ী বছরের ২৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ৫ জানুয়ারি চট্টগ্রামে তাপমাত্রা নেমে আসে ১৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ৪ জানুয়ারিও একই তাপমাত্রা ছিল। তার আগের দিন অর্থাৎ গত ৩ জানুয়ারি ছিল ১৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত সপ্তাহে সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল গত পয়লা জানুয়ারি, ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর শুক্রবার চট্টগ্রামে সর্বনি¤œ ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পূর্বাভাস কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ। বলেন, জানুয়ারি হচ্ছে সবচেয়ে শীতলতম মাস। বছরের এই সময়ে তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। এখন সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১৪ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। ঘন কুয়াশার একটি প্রবাহ দেশের বেশিরভাগ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে মধ্যাঞ্চল হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম পর্যন্ত ওই ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলায়ও সূর্যের খুব একটা দেখা মিলছে না। হিমালয় থেকে গঙ্গা অববাহিকা হয়ে আসা কুয়াশা ও শীতল বাতাসের প্রবাহের কারণে গত দুই দিন দেশের বেশিরভাগ এলাকার তাপমাত্রা দুই থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমেছে। শীতের এই দাপট আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
তাদের তথ্যমতে, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত প্রলম্বিত হতে পারে। নঁওগা, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ার কারণে দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলে মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি থাকতে পারে। বর্ধিত পাঁচদিনের আবহাওয়ার অবস্থায় তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ ২৬ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফে। আর সর্বনি¤œ নয় ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায়। চট্টগ্রামের সবকটি জেলায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১৩ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করেছে।
Discussion about this post