চট্টগ্রাম, ১৬ জুন, ২০২২:
চট্টগ্রাম বন্দরের নৌবহরে যুক্ত করা হল উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অত্যাধুনিক ২টি টাগবোট। বন্দরের বিদ্যমান চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে আধুনিক ও অধিক শক্তিশালী টাগবোটের প্রয়োজন বিবেচনায় এই টাগবোট দুটি সংগ্রহ করা হয়।১৬ জুন, বৃহস্পতিবার এগুলো চট্টগ্রাম বন্দরে আসে।
টাগবোট দুটি’র প্রত্যেকটির ক্ষমতা ৭৫ টন বোলার্ড পুল। এগুলো একেবারে আধুনিক প্রযুক্তির ASD টাগ অর্থাৎ টাগবোটগুলো একই স্থানে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে যেতে সক্ষম। একারণে টাগগুলো অধিক দক্ষতার সাথে বড় বাণিজ্যিক জাহাজসমূহকে towing, pulling, pushing ইত্যাদি কাজে সাহায্য করতে পারবে। টাগগুলোতে দুটি শক্তিশালী 3151 BHP অর্থাৎ (3151 BHP X 2 = 6300 BHP) ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিন রয়েছে। এতে শক্তিশালী অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রয়েছে যার মাধ্যমে প্রায় ১২০ মিটার দূর থেকেও দক্ষতার সাথে পানি এবং ফোমের মাধ্যমে যেকোনো আগুন নিভাতে সক্ষম। এছাড়াও নদীতে তৈল দূষণ হলে বিশেষ ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ছিটিয়ে দূষণ মোকাবেলা করতে সক্ষম। টাগ দুটিতে আধুনিক RADAR, GPS, Echo sounder, Auto pilot, UMS (Unattended Machinery Space), বেতার ও স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান ফলে, গভীর সমুদ্রেও যে কোনো জাহাজকে প্রতিকূল আবহাওয়াতেও সাহায্য করতে সক্ষম। জ্বালানি ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী টাগবোট দুটি সমুদ্রে একটানা এক মাস চলতে সক্ষম।
টাগ দুটি Cheoy lee shipyard, হংকং এর চায়নায় অবস্থিত ইয়ার্ডে নির্মিত। এই শিপ ইয়ার্ডে নির্মিত সমধর্মী টাগ সিঙ্গাপুর পোর্ট, সুয়েজ canal, Europe, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ বিশ্বের প্রখ্যাত বন্দরে ব্যবহৃত হচ্ছে। টাগবোট দুটি চলতি মাসের এক তারিখে চায়না হতে রওনা হয় এবং সাউথ চায়না সি, মালাক্কা স্ট্রেট এবং বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৩ টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায়।
টাগ বোট দুটি চট্টগ্রাম বন্দরের সার্ভিস জেটিতে বাথিং নেয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান, ই-ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান তরফদার মো. রুহুল আমিন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা ) মোঃ জাফর আলম, সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, সদস্য (প্রকৌশল) ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান সহ বন্দরের সকল বিভাগীয় প্রধান, উপ-বিভাগয় প্রধানগণ ।
এ ধরনের আধুনিক টাগবোট চট্টগ্রাম বন্দরের নৌবহরে সংযুক্ত হওয়ায় একদিকে যেমন বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে তেমনি ভাবে বন্দরের সুনামও অনেকাংশেই বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছে বন্দগ কর্তৃপক্ষ।
বিগত কয়েক বছরে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ গমনাগমনের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই কার্যপরিধি বিবেচনায় গত ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি তারিখে বৃদ্ধি করা হয় বন্দরসীমা। বাণিজ্যিক জাহাজসমূহকে বন্দরের জেটিতে নিরাপদে ভেড়ানো এবং প্রস্থানকালীন সময়ে টাগবোটের ব্যবহার আবশ্যিক। চট্টগ্রাম বন্দরে সাধারণ প্রযুক্তির প্রায় ৮টি টাগবোট বিদ্যমান। িএর সাথে যুক্ত হল আরও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাগবোট।
দেশের নিরবচ্ছিন্ন উন্নয়নে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত গুরু্ত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বর্হিবিশ্বের সাথে বাংলাদেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের প্রায় ৯২ শতাংশ এবং কন্টেইনারে পণ্য পরিবহনে ৯৮ শতাংশ এ বন্দরের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। খবর বিজ্ঞপ্তির