চট্টগ্রাম, ৬ জুলাই, ২০২২:
চট্টগ্রাম নগরের বড় দুটি পশুর হাট ইতিমধ্যে জমে উঠেছে। বেড়েছে ক্রেতাবিক্রেতা সমাগম। তবে ক্রেতারা এখন কেনাকাটার চেয়ে কোরবানির পশুর বাজার ঘুরে দেখছেন। তারা বাজারের পরিস্থিতি বুঝে কেনাকাটা করতে সময় ক্ষেপণ করছেন।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম নগরীর বিবির হাট পশু বাজারে এক ক্রেতা মো. হামিদুর রহমান বলেন, বিক্রেতারা দাম ছাড়ছেন না। আমরাও ঘুরছি। দেখছি। তারা কতক্ষণ দাম ধরে রাখতে পারে সেটাই দেখার বিষয়। তিনি ইতিমধ্যে দুটি বাজার ঘুরেছেন বলে জানান।
বেপারিরা কেউ কেউ জানান, তিন-চারদিন ধরে তারা হাটে গরু নিয়ে এসেছেন, কিন্তু এখনো কোনো গরু তারা বিক্রি করতে পারেননি। প্রায় ৮/১০ টা থেকে ২৫/৩০ টা পর্যন্ত এসব ক্রেতারা চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে গরু নিয়ে এসেছেন। যারা বেশি গরু নিয়ে বাজারে এসেছেন তাদের মধ্যে রাজশাহী ও চাপাই নবাবগঞ্জ অঞ্চলের বেপারিই বেশি।
তারা আরও জানান, তাদের আশার চেয়ে ক্রেতাদের দরদামের পার্থক্য ৫ হাজার টাকা থেকে ২৫/ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এজন্য তারা বিক্রেতার হাতে গরু বিক্রি করতে পারছেন না।
চট্টগ্রাম নগরীর বিবির হাট বাজারের বেপারিরা আশা করছেন, কাল বৃহস্পতিবার থেকে ক্রেতা বাড়বে। তখন তারা বাজারের পরিস্থিতি বুঝে কাক্সিক্ষত লাভেই গরু বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
চট্টগ্রাম নগরীর বিবির হাট বাজার ছাড়া সাগরিকা পশুর বাজার ঘুরে একটু ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। সেখানে বিবির হাটের চেয়ে বেচাবিক্রি আরও একটু ভালো।
তবে সাগরিকা বাজারে গরুর পরিমাণ অন্তত ৬/৭ গুণ বেশি। সেখানে মূল বাজারের বাইরেও বাজার এলাকায় আলাদা আলাদা জায়গা ইজারা নিয়ে গরু বিক্রি করা হচ্ছে। মুল বাজারের চেয়ে আকবর আলী নামে এক ইজারাদারের জায়গায় বেচাবিক্রি বেশ জমে উঠেছে। এজন্য তিনি বেশ প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। যে কারণে ক্রেতাদের ভিড় সেখানে অন্য যে কোনো পশু বিক্রির শেডের চেয়ে বেশি।
তবে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে আশা করছেন, কাল বৃহস্পতিবার থেকে বাজারের মন্দাভাব কেটে যাবে। ক্রেতারা অনেকে জানান, মূলত শহরে মানুষের ক্রয়কৃক কোরবানির পশু রাখার জায়গা সঙ্কট যেমন রয়েছে, তেমনি পশু লালনপালনও একটা বাড়তি কাজ। একই সাথে অর্থ খরচের বিষয়ও রয়েছে। যেখানে বেচাবিক্রি এখনো জমে উঠেনি। অন্যদিকে দাম উঠানামার বিষয়টিও ক্রেতারা বাজার ঘুওে যাচাই কওে দেখছেন। তবে কোরবানির সময় ঘনিয়ে আসলে কারো দরদাম নিয়ে বেশি অপেক্ষা করার সময় থাকবে না। সেক্ষেত্রে ধুমসে বেচাবিক্রি শুরু হবে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেচাবিক্রির পাশাপাশি কোনো বাজারের প্রবেশ পথে করোনার স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনের অংশ হিসাবে মাস্ক বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে প্রবেশকারীদের কেউ কেউ মাস্ক কিনে মুখ ঢেকে বাজারে প্রবেশ করছেন।
এছাড়াও বাজারের পশু চিকিৎসার জন্য বাজারগুলোতে রয়েছে ভেটেরিনারি চিকিৎসক টিম। সাগরিকা বাজারের প্রবেশ মুখে চিকিৎসক টিমের ইন্টার্নি ডাক্তার মো. রাব্বি রাহুল বলেন, দু’ একটা গরুর সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন বেপারিরা। তারা সেগুলোর চিকিৎসা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাজারে কৃত্রিম উপায়ে মোটা তাজা করা কোনো পশুর ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি। বাজারের সব গরুই সঠিক প্রক্রিয়ায় লালনপালনকৃত গরু বলে তিনি জানান।
বাজারগুলোতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় বাজারের প্রবেশমুখে রয়েছে পুলিশের টিম। তারা আইনশৃঙ্খলা সহ বাজারের যে কোনো বেআইনি কার্যক্রম যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে নাজরদারি করছেন বলে জানান।
বাজারগুলো হাসিল হিসাবে পশু ক্রেতাদের কাছ থেকে ৫ শতাংশ হারে টাকা আদায় করা হচ্ছে। সব বাজারে হাসিলের জন্য বাজারের কয়েকটি স্থানে বুথ বসানো হয়েছে।
Discussion about this post