চট্টগ্রাম, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪:
আসন্ন রমজানে ফের সড়ক-ফুটপাতে বসতে দেওয়ার দাবি তুলেছেন হকাররা। গত ৮ ফেব্রুয়ারি নগরীর নিউমার্কেট মোড় থেকে নতুন রেলস্টেশন, রিয়াজউদ্দিন বাজার, পুরাতন রেলস্টেশন, ফলম-ি, তামাকমু-ি লেইন ও আমতলসহ প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা থেকে হাজারের বেশি হকার উচ্ছেদ করে সিটি করপোরেশন। এই ঘটনায় আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি বেলা ১২ টার দিকে ছয় দফা দাবি নিয়ে হকাররা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর কাছে মিছিল সহকারে দাবি-দাওয়ার কথা জানাতে যেতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে টাইগারপাস মোড়ে পুলিশ বাধা দিলে তারা সেখানেই বসে পড়েন। যেখানে পাঁচটি হকার সংগঠনের নেতারা ছিলেন। যারা প্রায় হাজারখানেক হকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেলেন।
এ সময় টাইগারপাস থেকে কদমতলী অভিমুখী সড়কে প্রায় আধাঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পুলিশি তৎপরতায় হকার নেতাদের প্রতিনিধি আবেদন নিয়ে মেয়র কার্যালয়ে গেলে মেয়রের একান্ত সচিব লিখিত আবেদনটি গ্রহণ করেন। আবেদনে আসন্ন রমজানে ফের সড়ক-ফুটপাতে বসতে দেওয়ার দাবি তুলেছেন তারা। পুর্নবাসন করার আগ পর্যন্ত বিকাল ৩ টা থেকে ১১টা এবং ছুটির দিন পূর্র্ণদিবস ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।
এ নিয়ে চট্টগ্রাম হকার্স ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম লেদু বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শেষ করে আমরা ১০-১২ হাজার হকারের মিছিল নিয়ে মেয়রের কার্যালয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের টাইগারপাস মোড় পার হতে দেয়নি। এরপর সম্মিলিত হকার্স ফেডারেশনভুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা গিয়ে মেয়রের কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিই।
নগরীর কোতোয়ালি থানার ওসি এস এম ওবায়দুল হক বলেন, হাজারখানেক হকার প্রথমে পুরাতন রেলস্টেশন চত্বরে সমাবেশ করে। তার পর তারা মিছিল করে সিটি করপোরেশন ভবনের দিকে এগোতে চাইলে আমরা টাইগারপাস মোড়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ করি। তাদের একটি প্রতিনিধি দলকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
তবে ৮ ফেব্রুয়ারি উচ্ছেদেও পর হকাররা বিক্ষোভ করেছিলেন। পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ নিয়ে হকাররা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। পর দিন হকারদের কেউ কেউ আবারও বসতে চাইলে সিটি করপোরেশন তাদের সরিয়ে দেয়। এভাবে পর পর তারা নানাভাবে সড়ক ও ফুটপাতের বিভিন্ন অংশ দখলে নিতে শুরু করলে ১২ ফেব্রুয়ারি ফের অভিযান চালায় সিটি করপোরেশন। এসময় হকারদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষ, ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। আজত হয় পুলিশসহ বেশ কয়েকজন। এ ঘটনায় হকারদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের হয়েছে।
তবে ফুটপাত উন্মুক্ত রাখতে আবারও অনড় অবস্থান ব্যক্ত করেছেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। আজ বিকেলে চসিকের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, অবৈধভাবে ফুটপাত দখলকারীদের জনস্বার্থে উচ্ছেদ করেছি। অবৈধভাবে রাস্তা দখলের জন্য চাপ তৈরি করতে একটি মহল আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। কার আন্দোলন? কীসের আন্দোলন? জনগণের ফুটপাত দখল করার অধিকার ওদের কে দিয়েছে? যত আন্দোলনই করেন না কেন, আমি ফুটপাতে অবৈধভাবে বসতে দেব না।
কয়েক যুগ ধরে নগরীর নিউমার্কেট, রেয়াজ উদ্দিন বাজার, রেলস্টেশন এলাকা সহ নগরের বিভিন্ন স্থান দখল করে ব্যবসা কওে আসছিল হকাররা। পোশাক, মোবাইল, জুতা, তৈরি খাবারসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করার কারণে মানুষের হাঁটাচলার সমস্যার পাশাপাশি এলাকায় নিয়মিত যানজট লেগে থাকতো। দীঘদিনের সেই জঞ্জাল মুক্ত করেছেন চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
তবে উচ্ছেদ হওয়া হকারদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের পুনর্বাসনের দাবি তুলেছেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। ছবি: সংগ্রহ