সৌমেন ধরের কবিতা
জীবনের শ্লেট
প্রদীপেরও ছায়া থাকে
ঝড়ে নিভিবার আগে গড়ানোর মায়া থাকে
খুঁজিতে পেরেছে যারা জীবনের মূল
তাহাদের শ্লেট লিখে বার বার ভুল …
বার বার মুছিবার তরে
জীবন বানাও খড়িমাটি শ্লেট
হাতের তালুতে মুছে নাও যতো
লিখে আসা ভ্রান্তিবিলাস আর
অনিচ্ছাতে ভুলে যাওয়া অবাধ্য নামতা। …
প্রতি মোছনের শেষে প্রতিশুদ্ধ-
প্রতি নব- প্রতি নবায়ন অপূর্ণ বাসনা
তুমি যে এখন আর গীর্জার পাশ ঘেঁষে
স্মৃতির দেরাজে ভুলেও আসো না
পরষ্পরমুখি এই হাহাকার কখনো লিখোনা।#
কবিতার মতো রূপকথা …………
যেমত তোমার প্রেমে দ্রবীভূত হতে হতে
জলবায়ু হয়ে যাই- ততটাই তড়পাই
তোমারই প্রতিরূপে। অকিঞ্চিত প্রেমিক প্রবর
কতোইবা দিতে পারে প্রবল বাসনা ছাড়া-
এটুকু জেনেও তবু সে কখনো করেনি বঞ্চনা।
সে তোমার ছায়া- তুমি তা বুঝলেনা।
গোপিনী তোমার সখি প্রতিপক্ষ হলো
যে আমাকে রাজ্যপাঠ দিলো- তোমাকেও দিলো
শোকের নগরে তুমি সিংহাসনে একা
রাজনের নির্বাসনে যদি আজ হৃদয় রক্তরাগে-
রঞ্জিত শব্দের অনুরাগে পাঠ হয় প্রাণের পাঁচালি
তবে দেখে নিও কবিতার অধরা সে নারী
বর দেবে- ভালোবাসা দেবে দুহাত উজাড় করে।
অহর্নিশ তোমাকে যাপন করি
প্রত্যক্ষ পরের মতো তোমাকে আপন করি
তোমাকে হারাতে দেখে আমি শুধু হেরে যাই।#
পায়ের তলায় পাতা…..
বহুদিন খনিটির বন্ধ ছিলো মুখ
স্মৃতির জাবর আমি কাটিনা মোটেও
আলোহীন কয়লার খনি- ছিলোনা মশাল
যেন এক ব্ল্যাকহোলে আত্মসমাপ্তির টানে
নিজেই নেমেছি কালো ফসিলের পথে…
এসব তো ছিল জাগরণে বিভাবরী
তারপর আলোকের পথে এসে পেয়ে যাই
স্বপ্নের ফেরিঅলা লড়াকু শেরপা
সেই মাটির মমতা নিয়ে আমরা হাঁটতে থাকি
নাগরিক পথে- চেনা জানা বাঁকে।
দুজনেরই আছে ক্ষত
আততায়ী স্মৃতি আত্মীয়-মতো
আমি বললাম মুমূর্ষু স্বপ্নের কথা
নেচে উঠলো তার চোখ….
ঘুম ভেঙ্গে দেখি আমি সেই নিসঙ্গ ডাহুক
পায়ের তলায় যার শালুকের পাতা
পাতার তলায় জল……।