Portcity Link
আজ: বুধবার
৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয়
  • সারাদেশ
    • নগর-মহানগর
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • আন্তর্জাতিক
  • প্রেস রিলিজ
  • বিনোদন
  • শিল্প-সাহিত্য
  • আইন ও বিচার
  • চট্টগ্রাম
    • চট্টগ্রাম বন্দর
  • অন্যান্য
    • শিল্প ও বাণিজ্য
      • শেয়ারবাজার
    • শিক্ষা
    • ধর্ম
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
    • স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
    • বিজ্ঞানপ্রযুক্তি
    • প্রকৃতি-পরিবেশ
    • যুক্তিতর্ক
    • এন্টি জার্নালিজম
    • বিদেশী গণমাধ্যম
    • তারুণ্য
    • নারী
    • চা-বিস্কুট/আড্ডা
    • ঢাকায় থাকি
    • পথেপথে
    • প্রবাসী
    • ফেসবুক/সোশ্যাল মিডিয়া
    • বই থেকে
    • ব্যক্তিত্ব
    • ভ্রমণ-পর্যটন
    • মনপ্রাণ
    • সম্প্রীতি
    • সাজসজ্জা
    • স্বপ্ন ও উদ্ভাবন
  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয়
  • সারাদেশ
    • নগর-মহানগর
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • আন্তর্জাতিক
  • প্রেস রিলিজ
  • বিনোদন
  • শিল্প-সাহিত্য
  • আইন ও বিচার
  • চট্টগ্রাম
    • চট্টগ্রাম বন্দর
  • অন্যান্য
    • শিল্প ও বাণিজ্য
      • শেয়ারবাজার
    • শিক্ষা
    • ধর্ম
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
    • স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
    • বিজ্ঞানপ্রযুক্তি
    • প্রকৃতি-পরিবেশ
    • যুক্তিতর্ক
    • এন্টি জার্নালিজম
    • বিদেশী গণমাধ্যম
    • তারুণ্য
    • নারী
    • চা-বিস্কুট/আড্ডা
    • ঢাকায় থাকি
    • পথেপথে
    • প্রবাসী
    • ফেসবুক/সোশ্যাল মিডিয়া
    • বই থেকে
    • ব্যক্তিত্ব
    • ভ্রমণ-পর্যটন
    • মনপ্রাণ
    • সম্প্রীতি
    • সাজসজ্জা
    • স্বপ্ন ও উদ্ভাবন
No Result
View All Result
Portcity Link
No Result
View All Result
Home যুক্তিতর্ক

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ও সিরাজুল আলম খান

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ও সিরাজুল আলম খান
0
SHARES
29
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

#শরীফ নুরুল আম্বিয়া
জাতীয়সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের দীর্ঘ সংগ্রামের বিভিন্ন কালপর্বে জাসদ নেতাকর্মীদের অবদান, বিশেষ করে সামরিক শাসনবিরোধী সংগ্রামে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। জাসদ গঠনের পেছনে একটা ইতিহাস রয়েছে। রাজনৈতিক প্রয়োজন, সময়ের দাবি এবং সাংবিধানিক সুযোগ জাসদ গঠনে ভূমিকা রেখেছে। কারও ইচ্ছা বা খামখেয়ালিতে এ দল গঠিত হয়নি। বঙ্গবন্ধুর প্রশ্রয়ে একদল সাবেক ছাত্রনেতা সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বে বাঙালি জাতির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ছাত্রলীগের মধ্যে প্রথমে, পরে শ্রমিকদের মধ্যে নিবিড়ভাবে কাজ করেছিলেন। ১৯৬৯ সালের ছাত্র-গণআন্দোলনের সফল পরিণতিতে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বাতিল, বঙ্গবন্ধুর শর্তহীন মুক্তি, ১৯৭১-এর অসহযোগ আন্দোলন অনুসরণ করে ৬ দফাকে ১ দফার আন্দোলনে পরিণত করার মধ্য দিয়ে সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বাধীন নিউক্লিয়াস এক দুর্দমনীয় জাতীয়তাবাদী শক্তিতে পরিণত হয়, যার স্লোগান ছিল জয় বাংলা। ওই সময়ে বিশ্বে চলমান সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রভাব থেকে এই জাতীয়তাবাদী ধারা মুক্ত ছিল না, যার প্রতিচ্ছবি দেখা যায় ১৯৬৯-এর ছাত্রলীগ সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে সমাজতন্ত্রের সংযুক্তিকরণের মধ্যে। জয় বাংলা স্লোগানে শ্রমিক সমাজ আলোড়িত হয়েছিল, জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে শ্রমিক সমাবেশের কলেবর বৃদ্ধি, পর্যায়ক্রমে ১৯৬৯ সালে শ্রমিক লীগ গড়ে তোলা, যা প্রকারান্তরে জয় বাংলার আন্দোলনে সমাজতান্ত্রিক উপাদান সম্প্রসারিত করেছিল। এভাবেই এই ধারা আওয়ামী রাজনীতিতে এক শক্তিশালী প্রেসার গ্রুপ হিসেবে সক্রিয় ছিল স্বাধীনতার পূর্ব পর্যন্ত। ওই সময়ে নিবিড়ভাবে যারা ছাত্রলীগ ও ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন বা এই রাজনীতির খোঁজখবর রাখতেন তারা জানেন যে, বলাকা ভবনের ছাত্রলীগ অফিসে গণতান্ত্রিক সমাজবাদের রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ হতো। অবশ্য এটা ঠিক যে, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সুস্পষ্ট ধারণা তখনও আমাদের ছিলো না।
১৯৭১ সালে টান্ডোয়া ট্রেনিং ক্যাম্পের এক স্মরণীয় ঘটনা উল্লেখ করতে চাই। প্রথম ব্যাচে ট্রেনিং নেয়ার পর ৮ জনকে পরবর্তী ব্যাচগুলোর ট্রেনিং দানে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য রেখে দেন বিএলএফ হাইকমান্ড, । ভারতীয় প্রশিক্ষণ কর্তৃপক্ষ বিএলএফের এই ট্রেনিং ক্যাম্পে খোলামেলাভাবেই সমাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে পুঁজিতন্ত্র ও গণতন্ত্রের পক্ষে ব্রিফিং দিতেন। আমাদের নেতৃত্বে যখন দ্বিতীয় ব্যাচের ট্রেনিং শুরু হল, আমরা সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়ার রাত্রিকালীন লেকচার কোর্স শুরু করলাম, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাতে বাদ সাধল, ওরা বলল এই পলিটিক্যাল ক্লাস বন্ধ করতে হবে। আমরা বললাম, বন্ধ হবে না। আমাদের দেশ কীভাবে চলবে আমরা ঠিক করব, ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকবে। ওরা ট্রেনিং বন্ধ করে দিল। কয়েক দিন বন্ধ থাকল ট্রেনিং, ছেলেরা ব্যারাকে। এই সংকট নিরসন হল উচ্চ পর্যায়ে পাঁচ দিন পর, ট্রেনিং চালু হল। এরপর ট্রেনিং কোর্স প্রোগ্রাম আমরাই চাহিদা অনুযায়ী তৈরি করতাম ও বাস্তবায়ন করতাম। স্বাধীনতা-পূর্বকালে জাতীয়তাবাদের সঙ্গে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র ঢুকিয়ে দেয়ার তথ্যের কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। আর বঙ্গবন্ধুকে পাশ কাটিয়ে ঊর্ধ্বতন ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো সমঝোতা প্রতিষ্ঠা বিএলএফ নেতারা বা সিরাজুল আলম খান করবেন- তা নেহায়েত কল্পকথা ছাড়া আর কিছু না।
জাসদ সনাতন ধারায় কোনো কমিউনিস্ট, স্যোসালিস্ট বা বাম সংগঠন হিসেবে গড়ে ওঠেনি। ১৯২১ সালে ভারতবর্ষের কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ইতিহাসের সঙ্গে জাসদের কোনো সম্পর্ক ছিল না বরং একেবারেই স্বতন্ত্র একটা স্যোসালিস্ট ধারা হিসেবেই জাসদের জন্ম। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রকে কেউ কেউ যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তা মোটেই সে রকম ছিল না। সনাতন সমাজতান্ত্রিক ধারার সঙ্গে পার্থক্য সৃষ্টির জন্যই এই শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছিল মাত্র। স্বাধীনতা-উত্তর ছাত্রলীগের প্রথম সম্মেলনে তাই বঙ্গবন্ধুর মন্ত্র বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র এই স্লোগান দেয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর বিপ্লবী জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান করা হয়েছিল ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে। বঙ্গবন্ধু ওই পথে পা দেননি এবং আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা সম্ভবত তাকে সে পথে পা দেয়া থেকে বিরত রেখেছেন। বাস্তবে আমার মনে হয়, আওয়ামী লীগের তদানীন্তন নেতৃত্ব সিরাজুল আলম খান বা বিএলএফের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ছাত্র-শ্রমিকের সম্মিলিত রাজনৈতিক শক্তিকে গ্রহণ করতে চায়নি। এই প্রেসার গ্র“প, যা বঙ্গবন্ধুর প্রশ্রয়ে গড়ে উঠেছিল তা আওয়ামী লীগের জন্য ছিল অস্বস্তিকর। তাজউদ্দীন সাহেবের নেতৃত্বাধীন প্রবাসী সরকার বিএলএফের কোনো নেতাকে (শেখ ফজলুল হক মনিকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য করার কথা বলা হয়েছিল) মন্ত্রিপরিষদে গ্রহণ করেনি। বিএলএফের চার নেতার সঙ্গে মিলে কাজ করার বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ থাকলেও তিনি তা অনুসরণ করেননি। সিরাজুল আলম খান ছাড়া অন্য তিনজন শেখ মনি, আঃ রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ বঙ্গবন্ধুর দিকে তাকিয়ে রাজনীতি করলেও আওয়ামী রাজনীতির কোনো গুণগত পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পারেননি। বাকশাল গঠনের প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধুর হতাশাপূর্ণ বক্তব্য থেকে তা ফুটে উঠেছে।
প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সিরাজুল আলম খানের সাংগঠনিক দক্ষতায় আওয়ামী রাজনীতিতে যে প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী শক্তির উন্মেষ হয়েছিল, সংগঠনগতভাবে আওয়ামী লীগ তা ধারণ করার জন্য প্রস্তুত ছিল না, তাদের ইচ্ছাও ছিল না। বঙ্গবন্ধু কেন তার নিজস্ব ওই শক্তি ত্যাগ করলেন, তা বঙ্গবন্ধুই বলতে পারেন, যা বলার জন্য তিনি আর আমাদের মাঝে নেই।
জাসদ স্বাধীনতা-উত্তরকালে মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বে প্রথম বিরোধী দল হিসেবে গঠিত হয়েছিল সাংবিধানিক ধারায়। জাসদের বক্তৃতায় বিপ্লবের স্বপ্ন ছিল, কথাবার্তায় ঝাঁঝ ছিল। এ সময় জাসদ কিছু ভুলের ফাঁদে বাঁধা পড়ে। প্রথমত, আওয়ামী লীগের মুখোমুখি পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে গিয়ে এক সময় জয় বাংলা স্লোগান হারিয়ে যায়। এই স্লোগান ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত ছিল না। জাসদ ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিলেও ৬০টির বেশি আসনে তদানীন্তন আওয়ামী হামলার মুখে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে ব্যর্থ হয়, অনেকে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও প্রচার চালাতে পারেননি। নির্বাচনে বেশ কিছু আসনে আমাদের বিজয়কে যে হরণ করা হয়েছিল, তা তো আর মিথ্যা নয়। পরবর্তী পর্যায়ে আওয়ামী যুব-শ্রমিক সংগঠনের হামলার তোড়ে জাসদের স্বাভাবিক সাংগঠনিক কাজ চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। রক্ষীবাহিনী গঠনের পর পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি হয়। এহেন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য অনেকেই গা ঢাকা দিয়ে সশস্ত্র প্রতিরোধের প্রস্তুতি নেয়। যেসব জেলায় উদার আওয়ামী লীগ সক্রিয় ছিল, সেসব জায়গার পরিস্থিতি ছিল সহনীয়। দলের সামনে দুটো পথ ছিল তখন :
১. গণতান্ত্রিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে দলকে শক্তিশালী করা এবং পরবর্তী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হওয়া,
২. সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা। জাসদে দুটো মতই সক্রিয় ছিল। কিন্তু বিভিন্ন জেলায় জাসদের ওপর সশস্ত্র হামলা, রক্ষীবাহিনীর তাণ্ডব প্রভৃতির ফলে জাসদে গণতান্ত্রিক ধারা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ৭৪-এর জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর বাকশাল অভিমুখে সরকারি যাত্রা মোকাবেলার জন্য বিপ্লবী গণবাহিনী গঠন করা হয়। জাসদের অস্থিরতা ছিল না তা বলব না, তবে আমার কাছে মনে হয়, জাসদকে আঁতুড় ঘরে হত্যা করার আওয়ামী মহল বিশেষের অপকৌশলের ফাঁদে পড়ে জাসদ ওই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। দেশ শাসনে আওয়ামী লীগের কৌশল, বিভিন্ন পর্যায়ের দুর্নীতি আওয়ামী লীগকে জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিল এবং এ কারণে দলটি শেষ রক্ষার লক্ষ্যে একদলীয় শাসনে উপনীত হয়েছিল।
ক্ষমতার লড়াইয়ে জাসদ ও আওয়ামী লীগ উভয়েই পরাজিত পাকিস্তানি ধারাকে ব্যবহার করতে চেষ্টা করেছে একে অপরের বিরুদ্ধে। একদিকে সরকারের ওআইসিতে যোগদান, ইসলামিক ফাউন্ডেশন গঠন, মাদ্রাসা শিক্ষায় বিপুল অর্থ ব্যয়, পাকিস্তানি আমলা প্রশাসন সংরক্ষণ; অন্যদিকে পাকিস্তান প্রত্যাগত সেনাবাহিনী সপক্ষে টানার জাসদীয় চেষ্টা গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করেছে একই সমান্তরালে- তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
তবে জাসদ ষড়যন্ত্রের রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেয়নি বরং আদর্শিক নীতিতে অটুট থেকেছে। ক্ষমতার মোহে খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে আপস করেনি। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা যখন খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিপরিষদে যোগ দিয়েছে, তখন ওই সরকারও জাসদ কর্মীদের হত্যা করেছে। এটা স্পষ্ট যে, আওয়ামী রাজনীতিতে ওই সময় খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে পাকিস্তানি চররা আওয়ামী লীগে এবং সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনে সক্রিয় ছিল। শেষ বিচারে বঙ্গবন্ধু হত্যা ও আওয়ামী লীগের বিপর্যয়ের জন্য আওয়ামী লীগের ওই কুচক্রীরাই প্রধানত দায়ী, না কিছুটা দায় জাসদের ছিল- তা ইতিহাসবিদদের হাতে ছেড়ে দেয়াই ভালো। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বর্তমান বিশেষ পর্যায়ে আবারও জাসদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করা প্রকৃতপক্ষে পুনরায় পাকিস্তানপন্থী ষড়যন্ত্রকারীদের আড়াল করার অপচেষ্টা কিনা, তা ভেবে দেখা উচিত।
৭ নভেম্বরের ব্যর্থ অভ্যুত্থান ও কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করায় দলের কর্মী সমর্থকরা অনেক মুষড়ে পড়ে। পর্যাপ্ত জনসমর্থনের অভাব, আন্তর্জাতিক মিত্রের অভাব এবং গণবাহিনীনির্ভর সিদ্ধান্তে এই অভ্যুত্থান ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। তাহেরের ফাঁসির পর কয়েক মাসের মধ্যে ১৯৭৬ সালে গণবাহিনী বিলুপ্ত করা হয় এবং দল পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়। যদিও ১৯৮০-৮১ সাল পর্যন্ত দলের সিনিয়র নেতারাসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী বিচারাধীন বা বিনাবিচারে কারাগারে ছিলেন। ১৯৮১ সাল নাগাদ প্রায় সবাই কারামুক্ত হয়।
১৯৮২ সালে জাসদ কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি সামরিক আইনের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না, এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এই আন্দোলনের প্রাক্কালে ১৯৮৬ সালে সামরিক আইনের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়- এই নীতি বাস্তবায়নকালে ১৫ দল ভেঙে যায় এবং ৫ দলীয় বাম জোট গঠিত হয়। পরে ৩ জোটের রূপরেখার ভিত্তিতে আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত হয় এবং জয়লাভ করে। তবে আওয়ামী লীগের দলীয় শ্যোভিনিজম এবং নির্বাচনী জোট গঠনে ৫ দলীয় জোটের সামর্থ্যরে অতিমূল্যায়নের ফলে নির্বাচনী জোট গঠন সম্ভব হয়নি। সংসদীয় রাজনীতি, সামাজিক, অর্থনৈতিক প্রবণতা অনুসরণ করতে দল ব্যর্থ হয়। যদিও স্কপ ও ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আন্দোলন পরিচালনায় জাসদের প্রভাব ছিল অনস্বীকার্য।
১৯৯৬-এ বেগম জিয়ার একতরফা নির্বাচনবিরোধী জোট গঠিত না হলেও ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবীসহ বিসিএস ও ২৬ ক্যাডারের ঐক্য সংবলিত পেশাজীবী পরিষদের আন্দোলন গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্ট জাসদ নেতাকর্মীরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। এ আন্দোলনের পর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সহজাত দলীয় শ্যোভিনিজম আমাদের বিস্মিত ও বেদনাহত করে।
৯০ সালের পর গোলাম আযমের গণআদালতে বিচার দিয়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তার অন্যতম নেতা ছিলেন জাসদ নেতা কাজী আরেফ। কাজী আরেফ চিহ্নিত করেছিলেন, সমাজে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ও বিপক্ষে বিভক্ত। এই প্রেক্ষাপটে তিনি মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক শক্তির ঐক্য গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ৭১-এর ঘাতক দালাল নির্মূল ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন জাতীয় সমন্বয় কমিটি গঠনে তার অবদান সর্বজনস্বীকৃত। কাজী আরেফকে আওয়ামী শাসনামলে প্রকাশ্য দিবালোকে কুষ্টিয়ার এক সভামঞ্চে স্বাধীনতাবিরোধীরা হত্যা করে।
২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাসদসহ সব সেক্যুলার দলের বিপর্যয়ের পর জামায়াত-বিএনপির চারদলীয় জোটের জঙ্গি-সন্ত্রাসী-সাম্প্র্রদায়িক রাজনীতি মোকাবেলা করার জন্য জাসদ অসাম্প্রদায়িক ঐক্যের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে এবং দোদুল্যমানতা ছাড়াই আওয়ামী লীগের পাশে থেকে কার্যকর ঐক্য গড়ে তুলেছে। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মহাজোট সরকার গঠিত হয়েছিল। এই সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৭২ সালের সংবিধানের মূলনীতি গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হয়। প্রগতিশীল এই সাংবিধানিক ধারা নস্যাৎ করার জন্য বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত অক্ষশক্তি এখনও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করা এবং যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করাও তাদের লক্ষ্য। বিদ্যমান সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করতে জাসদ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একই সঙ্গে আমাদের ভাবতে হবে সংসদীয় কাঠামোর মধ্যে একটি স্থিতিশীল কার্যকর সংসদীয় ব্যবস্থা কীভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায়।
জাসদ গঠিত হয়েছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে। মানুষ দরিদ্র ছিল, তবে আত্মত্যাগের প্রতিশ্র“তিতে বলীয়ান ছিল। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছর পর দেশের দারিদ্র্য কমেছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে, বার্ষিক বাজেট যথেষ্ট বড়, প্রায় এক কোটি মানুষ বিদেশে চাকরি করে, মধ্যবিত্তের চাহিদা বেড়েছে, জনসংখ্যাও বেড়েছে অনেক, হয়েছে ১৭কোটি। তবে, ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বেড়েছে, কিছু উদ্যোক্তার জন্ম হয়েছে, বিপুল যুব সমাজ রয়েছে, অর্থ-বিত্তকেন্দ্রিক হয়েছে মানুষ, আগের মতো আদর্শকেন্দ্রিক আর নেই। বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে, সমাজতান্ত্রিক কেন্দ্রের পতন হয়েছে, তবে সামাজিক ন্যায়বিচারের দাবি বেড়েছে, উদীয়মান নতুন অর্থনৈতিক শক্তির জন্ম হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা সমাজ ও অর্থনীতিকে দ্রুত পরিবর্তনশীল করেছে।
শ্রমিক-কৃষকের মুক্তির লক্ষ্যে একসময় জাসদ গড়ে উঠেছিল। আজ সেই শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির লক্ষ্যেই জাসদকে জনগণের দলে পরিণত করতে হবে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে। এভাবেই বাংলাদেশ জাসদ আগামী দিনে বৈষম্যহীন সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণে আরও অধিক অবদান রাখতে পারবে এবং সাফল্য অর্জনে সক্ষম হবে।।
লেখক: সভাপতি-বাংলাদেশ জাসদ।

ShareTweetShare
Previous Post

মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবায় ‘শ্রেষ্ঠ সংগঠন’ হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেল মমতা

Next Post

৩৪ বছর পর চট্টগ্রাম থেকে এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম

Related Posts

জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের সামরিক গুরুত্ব অপরিসীম: ফরহাদ মজহার
চট্টগ্রাম

জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের সামরিক গুরুত্ব অপরিসীম: ফরহাদ মজহার

মে দিবস/ রিক্তদের দৃপ্ত নেতা সিলভিস
যুক্তিতর্ক

মে দিবস/ রিক্তদের দৃপ্ত নেতা সিলভিস

বিশ্লেষণ/অর্থপাচার কমেছে বলে রিজার্ভ বাড়ছে
যুক্তিতর্ক

বিশ্লেষণ/অর্থপাচার কমেছে বলে রিজার্ভ বাড়ছে

সামরিক দমন অভিযান: ২৬ মার্চ, ১৯৭১
যুক্তিতর্ক

সামরিক দমন অভিযান: ২৬ মার্চ, ১৯৭১

খোন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াস মুজিববাদ’র যে সম‍স‍্যা চিহ্নিত করেছিলেন
Uncategorized

খোন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াস মুজিববাদ’র যে সম‍স‍্যা চিহ্নিত করেছিলেন

গ ণ অ ভ্যু ত্থা ন  ও  এ কু শে র  গ ণ ভা ব না
যুক্তিতর্ক

গ ণ অ ভ্যু ত্থা ন  ও  এ কু শে র  গ ণ ভা ব না

Next Post
৩৪ বছর পর চট্টগ্রাম থেকে এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম

৩৪ বছর পর চট্টগ্রাম থেকে এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম

Discussion about this post

Archive Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 ১২
৩৪৫৭৮৯
১০১১১১৩৪১৫১৬
১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৯৩০
৩১  

সম্পাদক ও প্রকাশক :

সম্পাদকীয় কার্যালয় :

৪০ মোমিন রোড, কোতোয়ালী, চট্টগ্রাম

মোবাইল : 
ইমেল:

Copyright © 2018: portcitylink II Design By : F.A.CREATIVE FIRM

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয়
  • সারাদেশ
    • নগর-মহানগর
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • আন্তর্জাতিক
  • প্রেস রিলিজ
  • বিনোদন
  • শিল্প-সাহিত্য
  • আইন ও বিচার
  • চট্টগ্রাম
    • চট্টগ্রাম বন্দর
  • অন্যান্য
    • শিল্প ও বাণিজ্য
      • শেয়ারবাজার
    • শিক্ষা
    • ধর্ম
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
    • স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
    • বিজ্ঞানপ্রযুক্তি
    • প্রকৃতি-পরিবেশ
    • যুক্তিতর্ক
    • এন্টি জার্নালিজম
    • বিদেশী গণমাধ্যম
    • তারুণ্য
    • নারী
    • চা-বিস্কুট/আড্ডা
    • ঢাকায় থাকি
    • পথেপথে
    • প্রবাসী
    • ফেসবুক/সোশ্যাল মিডিয়া
    • বই থেকে
    • ব্যক্তিত্ব
    • ভ্রমণ-পর্যটন
    • মনপ্রাণ
    • সম্প্রীতি
    • সাজসজ্জা
    • স্বপ্ন ও উদ্ভাবন