চট্টগ্রাম, ৮ অক্টোবর, ২০২১:
সিকিউরিটিজ প্রতিষ্ঠানের ট্রেডাররা শেয়ার কারসাজিতে জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন শেয়ার বাজার সংশ্লিষ্টরা। গতকাল বৃহস্পতিবার ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ, ২০২১’ উপলক্ষে ‘মার্কেট ম্যালপ্র্যাকটিস অ্যান্ড ইনভেস্টরস অ্যাওয়ারনেস’ শীর্ষক ওয়েবিনার বক্তারা এসব কথা বলেন। শেয়ার তথ্য সংরক্ষণকারী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) ওয়েবিনারটির আয়োজন করে। বক্তারা বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে নিয়মিত শেয়ার কারসাজি, কৃত্রিমভাবে শেয়ারদর বাড়ানো, সংঘবদ্ধ শেয়ার কেনাবেচা, একই ব্যক্তির শেয়ার কেনাবেচা ও ভুয়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। আর এ কাজে সবচেয়ে বেশি জড়িত হচ্ছে সিকিউরিটিজ প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত ট্রেডাররা। বর্তমান প্রযুক্তিতে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা সহজ নয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, পুঁজিবাজারে বিভিন্ন পদ্ধতি ও উপায়ে নীতিমালার বাইরে গিয়ে কৃত্রিমভাবে শেয়ারদর বাড়িয়ে কারসাজি করা হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে স্পুফিং, পাম্প অ্যান্ড ডাম্প, ওয়াশ ট্রেড, ইনসাইডার ট্রেডিং ও চার্নিং। এসবের সঙ্গে ট্রেডাররা জড়িত। তারাই শেয়ারের কৃত্রিম সংকট ও কেনাবেচার অস্বাভাবিক চাপ তৈরি করে। কারণ হচ্ছে, শেয়ার কারসাজি করে অর্থ হাতিয়ে নিতে তারাই একাধিক বিও অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণ করে।সিডিবিএলএর চেয়ারম্যান একেএম নুরুল ফজল বুলবুলের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারটির সঞ্চালনা করেন সংস্থাটির প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেব।
ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ছিলেন বিএসইসির কমিশনার মো. আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, জিডিপিতে শেয়ারবাজারের অবদান ৫০ শতাংশ করার জন্য বর্তমান কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। জিডিপিতে মার্কেটের এমন বড় অবদান রাখার জন্য মার্কেটের যেসব পিলার শক্তিশালি করা দরকার তাই করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ও সাবেক সচিব মো. আব্দুল হামিদ।
তিনি আরও বলেন, শেয়ার কারসাজি বন্ধ হলে বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হবেন। এজন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদেরও সচেতন হতে হবে। পুঁজিবাজারের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার বা মার্কেট ইন্টারমেডিয়টরদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাজার উন্নয়ন ও একটি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে তাদের এগিয়ে আসতে হবে। তারাই বিনিয়োগকারীর সঙ্গে বাজারের সংযোগ তৈরি করে দেন।আগামী ২০২-২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার জিডিপিতে ৫০ শতাংশ অবদান রাখবে। এর জন্য মার্কেটের যা যা পরিবর্তন করে শক্তিশালি করতে হয় তাই করা হবে। এর জন্য মার্কেটের সকল সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চান তিনি। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫০ শতাংশ পুঁজিবাজার অবদান রাখবে বলে মন্তব্য করেছিলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কে এ এম মাজেদুর রহমান।
তার মতে, ৭ শতাংশ জিডিপিতে বর্তমানে পুঁজিবাজারে অবদান ২০ শতাংশ। আগামী তিন বছর পর এ অবদান বেড়ে হবে ৫০ শতাংশ।সে বছর ৮ জানুয়ারি ডিএসইতে ‘উন্নয়ন মেলা-২০১৭’ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছিলেন তিনি।
এতে লঙ্কা বাংলা সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী ও পরিচালক মো. খন্দকার সাফফাত রেজা বলেন, বর্তমানেও কিছুটা কারসাজি করার সুযোগ রয়েছে, ক্ষেত্রবিশেষে যে হচ্ছে না, তাও না। আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে একটি ভালো মানের বাজার তৈরিতে। এজন্য ফ্রি-ফ্লোট শেয়ারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। আর কারসাজি রোধে প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বৃদ্ধি করতে হবে। যেখানেই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হয়েছে, সেখানেই অনিয়ম ও দুর্নীতি কমে গিয়েছে। সূত্র : শেয়ার বিজ ও শেয়ার নিউজ
Discussion about this post